কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দ্বিতীয় দিনের মতো ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বেসরকারি পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। বিকেলের মধ্যে দাবি আদায় না হলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।
শনিবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধারীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চিকিৎসকরা ।আজও (৯ জুলাই) এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা এ সময় ” পেটে খেলে পিঠে শয়,মিথ্যে আস্বাস আর নয়,”
‘ক্ষুধা পেটে সেবা নাই’সহ বিভিন্ন স্লোগানে মুখর করে তোলেন পরিবেশ।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমাদের ৩টি দাবি ছিল। এর মধ্যে আমাদের বকেয়া ভাতা দেয়া হয়েছে এবং নিয়মিত ভাতা দেয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের মূল দাবি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। মূল দাবিই ছিল আমাদের ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ফরহাদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের বকেয়া ভাতা শোধ করা হয়েছে এবং ভাতা নিয়মিত করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করার দাবি এখনও আদায় হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো লিখিত আশ্বাস না পাব, ততক্ষণ আমরা আমাদের দাবি আদায়ে গণ অনশন চালিয়ে যাব।’
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, ‘ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। আজ (রোববার) বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান নেব। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া কর্মবিরতি চলমান থাকবে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক ইয়াসমিন হক বলেন, ‘প্রাইভেট পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ট্রেইনি ডাক্তারদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ন্যায্য দাবির বিষয়ে বারবার কর্তৃপক্ষ সমর্থন দিয়ে থাকলেও, তাদের আশ্বাস বরাবরের মতোই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের দাবি এখনও আদায় হয়নি। তারা নানাভাবে সময় দিয়ে কথা রাখছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে ২০ হাজার টাকায় একজন ডাক্তার কীভাবে সংসার চালাতে পারেন।একটা বড় শহরে থেকে এই টাকা সংসার পরিচালনার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়।’সমস্যা সমাধানে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে। মিথ্যা আশ্বাস এবং সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছুই আমরা পাইনি।’ ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা আমাদের দেশের চেয়ে অনেক বেশি। ভারতে হচ্ছে ৬৭৬৮৩ টাকা ও পাকিস্তানে ৩৮০০০ টাকা। সেখানে আমরা মাত্র ২০ হাজার টাকায় কীভাবে চলব?’
প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা বলেন, চলতি অর্থবছরও স্বাস্থ্য খাতের বাজেট ৬৭ শতাংশ অব্যবহৃত থাকায় ফেরত পাঠানো হবে। যার পরিমাণ ৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। সব পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের ভাতা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করলে বাড়তি খরচ হবে মাত্র ৯ কোটি টাকা। আমাদের এ দাবি যৌক্তিক বলেই মনে করছি।’
গত সোমবার (৩ জুলাই) পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নূরুন্নবী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দাবি আদায়ে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়, যা এখন গণ অনশনে রূপ নিয়েছে। লিখিত প্রজ্ঞাপন না পাওয়া পর্যন্ত তারা এ গণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বলে জানান তারা।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস