পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবসের স্মরণে আজ সকাল ১১.০০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যােগে শোক র্যালী ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। উক্ত শোক র্যালী ও মানববন্ধন খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরের সামনে থেকে শুরু হয়ে চেঙ্গী স্কয়ার হয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ ঘুরে পুনরায় শাপলা চত্বরে এসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ লোকমান হোসাইন সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও বাঘাইছড়ির সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর কবির, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র কেন্দ্রীয় সিঃ যুগ্ন সম্পাদক খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি আব্দুল মজিদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলার সিঃ সহ-সভাপতি এস এম মাসুম রানা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুজ্জামান ডালিম, খাগড়াছড়ি জেলা সহ-সভাপতি এস এম হেলাল, রাঙামাটি জেলার দপ্তর সম্পাদক মোঃ হাবিব আজম হাবিব, উপস্থিত ছিলেন ছাত্রনেতা আসাদুল্লাহ্ আসাদ, পিসিএনপি খাগড়াছড়ি জেলা যুগ্ন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সহ- সাধারণ সম্পাদক জালাল প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলমগীর কবির বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র হচ্ছে, পাহাড়ে খুন, গুম, হত্যা করে রক্তের হলি খেলায় মেতেছে সন্তু, প্রসিতের নেতৃত্বধীন সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস, ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসীরা। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সন্তু লারমা, প্রসিত খীসা। এসব সন্ত্রাসীদেরকে গণ জাগরণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা হবে।
পাবর্ত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস’র সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত, নাড়কীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডে শিকার হয়েছে পাবর্ত্য অঞ্চলের বাঙালীরা। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আজ বুধবার পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আব্দুল মজিদ বলেন ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি জেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙালী কাঠুরিয়াদের ওপর নিমর্ম নিযার্তনের পর হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম ববর্র গণহত্যা দিন। এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালী কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তি বাহিনী। তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।
নেতৃবৃন্দদের দাবি, মানবাধিকার এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সকল বাঙালী গণহত্যাকান্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সম্প্রীতি রক্ষায় সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ও দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসা সহ তাদের সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।