খাগড়াছড়ি : পার্বত্য খাগড়াছড়ির সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত মাটিরাঙ্গা বাজারে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। মাটিরাঙা পৌর শহরের একমাত্র বাজারের বিভিন্ন গলি পথ আর প্রধান সড়কই যেন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার কারণে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এনিয়ে সচেতনমহল সহ বাজারে আসা ক্রেতা, বিক্রেতা ও পথচারীদের অভিযোগ থাকলেও মাটিরাঙা পৌর প্রশাসনের টনক নড়েনি। ব্যবস্থায় নেয়নি মাটিরাঙা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিও।
এমন পরিস্থিতিতে মাটিরাঙ্গা পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব নেয়ার সাত দিন না যেতেই মাটিরাঙা বাজারের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামলেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনজুর আলম।
বুধবার (৯ অক্টোবর) ভোরে জনবহুল মাটিরাঙা বাজারের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছনতা অভিযান শুরু করেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আলম।
জানা গেছে, তখনও সবেমাত্র সকালের সুর্য্য উঠেছে। যখন কেউ ঘর থেকে বের হয়নি, তখন মাটিরাঙা পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিয়ে মাটিরাঙা বাজারের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামলেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনজুর আলম।
অভিযানকালে মাটিরাঙা বাজারের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন অলি-গলিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেন। জমে থাকা ময়লার স্তুপ ও ময়লা পানি পরিস্কারে সরাসরি অংশ নেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও মাটিরাঙা পৌর প্রশাসক মনজুর আলম।
মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে কয়েকজন ব্যবসায়ী ময়লা আবর্জনার ফেলার জন্য গুরুত্বপুর্ন স্থানে অস্থায়ী ডাস্টবিন স্থাপনের দাবী জানান। পাশাপাশি ময়লা আবর্জনার ফেলার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন হওয়ারও আহবান জানান তারা।
বাজারে আসা ক্রেতা মো. নুরুল আফছার বলেন, মাটিরাঙা বাজারে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনার স্তূপ দেখা যেত। ইউএনও মহোদয়ের উদ্যোগে আজ বাজারসরকার অনেকটা পরিচ্ছন্ন দেখাচ্ছে। বদলে যাওয়ার আভাস মিলেছে। তবে ক্রেতা-পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গলিপথগুলো উদ্ধারের দাবী জানান তিনি।
এদিকে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনা রাখার আহ্বান জানান মাটিরাঙা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জসীম উদ্দিন জয়নাল।
মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও মাটিরাঙা পৌর প্রশাসক মনজুর আলম বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই গণমাধ্যমকর্মী ও সচেতন মহলের পক্ষ থেকে গুরুত্বপুর্ণ এ বাজারকে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত করার অভিযোগ ছিল। তাই পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিয়ে আমি নিজেই পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছি। এখন থেকে মাটিরাঙ্গা বাজারে কোন ধরনের ময়লা থাকবেনা। প্রতিদিনই নির্ধারিত স্থানে থাকা ময়লা সরিয়ে নেয়া হবে।
প্রথমবারের মতো মাটিরাঙা বাজারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে খোদ ইউএনও মাঠে নেমে আসায় ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সচেতনমহলের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। পাশাপাশি ইউএনও’র এমন উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুরু করে ক্রেতা-বিক্রেতা ও সচেতন মহল।