মাসুদ রানা, বিশেষ প্রতিনিধি:
দেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হলে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলো আন্তর্জাতিক সংন্ত্রাসীদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রাজধানীর নটরডেম কলেজে শুক্রবার বিকেলে আদিবাসী ফোরামের এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের একটি কেন্দ্রস্থলে পরিণত হতে পারে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে বিশ্ব ফোরামকে আহ্বান জানাতে চাই৷ তাদের যত তাড়াতাড়ি নিজ দেশে ফেরানো যায়, ততই মঙ্গল। আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যত তাড়াতাড়ি তাদের নিজ দেশে ফেরত যাবে, ততই তাদের দেশের জন্য এবং আমাদের দেশের জন্য মঙ্গলজনক।’
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্রমেই সংঘাত বাড়ছে। প্রায়ই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠন। এতে প্রায়ই প্রাণ ঝড়ছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, গত ৬ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অন্তত ৫৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে, শুক্রবার ভোরে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাপে আরসা এবং আরএসও সন্ত্রাসীদের গুলাগুলিতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সকলেই আরসার সক্রিয় সদস্য।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সম্পর্কে আপনারা জানেন, সেখানে শুধু আরাকান আর্মিদের বিছিন্নতাবাদী নেই, বরং সেখানে কুকি চিনসহ প্রায় ৩০টি গোষ্ঠী সবসময় সংঘর্ষে লিপ্ত। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সেখান থেকেই আসছে। সেখান থেকে আসার কারণে হয়তো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের দু-চারজন অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যেই সংঘর্ষ হয়ে থাকতে পারে। এখানে কে নেতৃত্ব দেবে, সেটা নিয়েই সংঘর্ষ হচ্ছে। আজকের ঘটনাটি আমাদের আরও বিস্তারিত জানতে হবে। এর তদন্ত প্রতিবেদন আমরা দ্রুত জানাবো।’
রোহিঙ্গারা অস্ত্র পাচ্ছে কোথায়- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কিছু সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত রয়েছে। নাফ নদীতে এমন কয়েকটি চর আছে যেগুলো মিয়ানমার ও বাংলাদেশের নো-ম্যানস ল্যান্ড। সেখানে তারা অভায়রণ্য তৈরি করেছে। সেখানে তারা অহরহ যাতায়াতও করছে। আমরা সেই জায়গাগুলোর জন্য নিরাপত্তা বাড়াচ্ছি।’
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/রনি