খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার আলো। পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের পাকা ঘর।
সম্প্রীতি দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা গুলো পরিদর্শন করে, শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করা, প্রশাসনিক সেবা সহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর পৌঁছে দেন প্রকৃত উপকার ভোগীদের মাঝে। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে উপকার ভোগী সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।
উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলো মানসম্মত শিক্ষা থেকে পিছিয়ে থাকায় দুর্গম এলাকার প্রায় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষা সামগ্রী, বই, ফুটবল সহ খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান করে শিক্ষার্থীদেরকে উদ্ধুদ্ধ করেন তিনি।
এছাড়াও এলাকাবাসীর উদ্যোগে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত দুর্গম নাড়াইছড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সম্প্রীতি উপজেলার মেরুং ইউপিতে প্রস্তাবিত রেংকার্য্যা মেত্রী কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায়
দুর্গম লম্বাছড়া ত্রিপুরা পাড়ার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ’।
আরাফাতুল আলম নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন উচ্চবিদ্যালয় পরিদর্শন সহ শিক্ষার্থীদেরকে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ ও বাল্য বিবাহের মতো সামাজিক ব্যধিকে লাল কার্ড দেখিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করান। সচেতন করেন মাদক ও স্মার্ট ফোনের প্রতি আসক্তের বিষয়ে।
জনবান্ধন ও শিক্ষা বান্ধব এই কর্মকর্তা উপজেলার ক্রিড়া জগতে জাগিয়েছেন আসার আলো। প্রতিটি ইউপির ক্রিড়া প্রেমী খেলোয়াড়দের মাঝে প্রদান করেছেন ক্রিড়া সরঞ্জাম। জুগিয়েছেন উৎসাহ, দিয়েছেন উদ্দীপনা।
বিভিন্ন হাইস্কুলে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মুক্তপাঠ কক্ষ ‘অগ্নিবীণা’, অভিভাবক ছাউনি ‘আরন্যক’, স্বাধীনতা মঞ্চ, স্কাউট সমাবেশ, শিক্ষার্থী সমাবেশ সহ আরো অনেককিছু।
সংশ্লিষ্টদের মতে, জনসেবায় সততা, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
যার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২২-২৩ এ জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। পেয়েছেন শুদ্ধাচার পুরস্কার।
উপজেলার দুর্গম লম্বাছড়া এলাকার শিব রানী চাকমা (প্রতিবন্ধী) বলেন, আমি দুর্গম এলাকায় বসবাস করি। আমার বসতঘর ছিলোনা, প্রতিবন্ধী হওয়ায় কাজও করতে পারিনা। ইউএনও আরাফাতুল স্যার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাকে পাকা ঘর দিয়েছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী ও ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
পোমাংপাড়া এলাকার পুষ্পমনি ত্রিপুরা (বিধবা) ও মধ্য বোয়ালখালী পশ্চিম পাড়ার শাজু আক্তার বলেন, ইউএনও স্যার পরিদর্শনে আসলে দেখতে পায় আমাদের থাকার মতো ঘর নেই। আমাদের জীবনবৃত্তান্ত শুনে একটি পাকা ঘর দিয়েছেন। ইউএনও স্যার ভালো মানুষ।
ইউএনও আরাফাতুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দীঘিনালা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকেই সমৃদ্ধ দীঘিনালা গড়ার লক্ষ্যে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। দুর্গম এলাকায় প্রশাসনিক সেবা, গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার পাকা ঘর, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছি। আমি উপজেলার জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ সহ সকলের সহযোগিতা পেলে সমৃদ্ধ দীঘিনালা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস