পেশায় গৃহিণী সোমা সাহা (৪৪)। বৈধ আয়ের উৎস নাই। স্বামীর উপর নির্ভরশীল। তবুও ১ কোটি ১৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক তিনি। সোমা সাহা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুড়ির স্ত্রী সোমা সাহা (৪৪)।
মঙ্গলবার (৭ জুন) প্রকৌশলী পত্নীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুপুরের দিকে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর-৮।
অভিযুক্ত সোমা সাহা ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার বেলাট দৌলতপুরের বাসিন্দা। তিনি স্বামী পরিমল কুমার কুড়ির সাথে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অফিসার্স কোয়ার্টারে বসবাস করেন।
এদিকে, অভিযুক্ত সোমা সাহার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার দুপুরের পর মামলাটি রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। শেষে মামলাটি বিশেষ মামলা ৫/২০২২ হিসেবে রেজিস্ট্রিভুক্ত হয়েছে। মামলাটির বাদি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। তিনিই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সহকারী পরিচালক জানান, আসামি সোমা সাহা একজন গৃহিণী। তার কোন বৈধ আয়ের উৎস নাই। তিনি স্বামীর উপর নির্ভরশীল।
কিন্তু স্বামী পরিমল কুমার কুরীর অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ দ্বারা ১ কোটি ১৯ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানে এই অনিয়ম উঠে আসে। নিজের আয়কর নথিতেও এই বিপুল সম্পদ প্রদর্শন করেছেন সোমা সাহা। যা জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ। স্বামীর অবৈধ সম্পদ গোপন করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় সোমা সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা হয়েছে। এর আগে সোমবার (৬ জুন) প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলা নম্বর ৭। ওই মামলাটিরও বাদি দুদকের সহকারী পরিচালক আমি হোসাইন।
জানা গেছে, দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ওই প্রকৌশলী ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার সম্পদের উৎসের সন্ধান দিতে পারেনি। তাছাড়া ৩৬ লাখ ১২ হাজার ৬৭৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এর আগে নোটিশ পেয়ে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন পরিমল কুমার কুড়ি ও তার স্ত্রী সোমা সাহা। পরে এসব নথি অনুসন্ধানে এই দম্পতির অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপনের বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপরই তাদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে দুদক।
এম/এস