মাটিরাঙ্গাতে নতুন ঘর পেয়ে, নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন মঙ্গল চাকমা এবং মাটিরাঙ্গা থানায় নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের উদ্ভোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের প্রতিটি থানা এলাকায় গৃহহীন পরিবারের জন্য একটি গৃহ নির্মাণ এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপনের মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে। রোববার (১০ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন মুজিববর্ষে বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে পুলিশ গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করছে।
এ কর্মসূচির আওতায় ৫১৯টি থানা এলাকায় ৫২০টি গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০০ গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ৪১৫ বর্গফুট আয়তনের দৃষ্টিনন্দন প্রতিটি গৃহ পরিবেশবান্ধব নির্মাণসামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি থানায় স্থাপন করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক। দেশের ৬৫৯টি থানায় একটি বিশেষ কক্ষ নির্মাণ অথবা প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে উপযুক্ত পরিবেশে এ ডেস্ক তৈরি করা হয়েছে।
ডেস্ক পরিচালনার জন্য একজন সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে প্রশিক্ষিত নারী পুলিশ সদস্যদের পদায়ন করা হয়েছে। ডেস্ক কর্মকর্তা থানায় আগত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সমস্যা মনোযোগ সহকারে শুনে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।
বিশ্বের যেকোনো দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম।পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমেই সমাজে বিরাজ করে শান্তিশৃঙ্খলা। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি মানবিক কাজেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ পুলিশ সহ মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।
এরই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘর নেই যাদের সারা দেশের ন্যায় মাটিরাঙ্গায় থানা এলাকায় একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যেগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সারাদেশের ন্যায় মাটিরাঙ্গা পৌরসভার টিএনটি টিলা গ্রামের গৃহহীন মঙ্গল চাকমার পরিবারের হাতে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গৃহহীন মঙ্গল চাকমা তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়ে থাকতেন।সে দিন মুজুরের কাজ করে যা উপার্জন করে তাতে সংসার চলত কষ্টেসৃষ্টে।এতে করে তার ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোও কঠিন হয়ে যেত। শেষ বয়সে এসে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ পুলিশের উপহার হিসেবে ঘর পেয়ে মঙ্গল চাকমা ও তার পরিবার দারুণ খুশি।মঙ্গল চাকমা বললেন,“আমি দিনে আনি দিনে খাই জীবিকা নির্বাহ করা আমার জন্য অনেক কষ্টের। এখন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ পুলিশ আমাকে ঘর দিছে, আমাদের অনেক উপকার হইছে।সৃষ্টিকর্তা আমাগোরে মুখ তুইলা চাইছে।ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ পুলিশকে।
”প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে তাদের মুখে আনন্দের হাসি।সবাই নিজের ঘরে একটু স্বস্তির জীবন পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলী জানান,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের পুলিশ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ পুলিশ মানবিকতায় উজ্জীবিত হয়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, যা জনবান্ধব পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।
এম/এস