কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ছৈয়দুল আমিন প্রকাশ ডালু মাঝির নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও কালোবাজারি সহ বিভিন্ন অভিযোগে বহু মামলা রয়েছে।এসব মামলায় একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে জেলেও যান।দীর্ঘ কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পূর্বের নেশায় ক্যাম্প অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ইয়াবা-মাদক, চোরাচালান ও কালোবাজারী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।ফের সক্রিয় করে তুলেছে বাহিনী সদস্যদের। ডালু মাঝি কুতুপালং ক্যাম্প-২’র,ব্লক ই-২’র আশরাফ আলীর ছেলে।
ডালু মাঝি গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আর বেরিয়ে এলে ভয়ে-আতংকে দিনরাত পার করে রোহিঙ্গারা।তার গ্রেফতারের খবর রোহিঙ্গা শিবিরে ছড়িয়ে পড়লে অনেক সাধারণ রোহিঙ্গা ফাতিহা মান্নত করে থাকেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক রোহিঙ্গা বলেন, ডালু মাঝি রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠনের অর্থ যোগানদাতা। মিয়ানমার সীমান্ত কেন্দ্রিক তার রয়েছে বিশাল ইয়াবা,মাদক ও চোরাচালান সিন্ডিকেট। সেই হিসেবে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে কম দামে ক্যাম্পে সরবরাহকৃত ত্রাণের মালামাল ক্রয় করে উখিয়ার কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাঝে বিক্রয় করে থাকে। এ নিয়ে কেউ মূখ খুললে গুম অথবা খুন হয়ে থাকেন, যার কারণে সহজে মুখ খুলতে চান না রোহিঙ্গারা। তবে তার এসব দেখাশোনা করে থাকেন কুতুপালং এলাকার আলী আকবর সহ একাধিক অপরাধী ডালু মাঝির সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। আলী আকবরের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায়, ছৈয়দুল আমিন ডালু মাঝি’র বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩টি মামলা রয়েছে, যার নং-উখিয়া থানা মামলা নং-২১, তারিখ-০৯/০৬/২০২১, মামলা নং-২৯, তারিখ-০৯/০৫/২০২১, মামলা নং-৩৯, তারিখ-
১৯/০৬/২০২১। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে উখিয়া থানায় দায়ের করা মামলা নং-১৮, তাং-০৬/১০/২০২০। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে৷
ডালু মাঝি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কালোবাজারি ও অপরাধ জগতের মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত। টাকা ও খাবারের লোভ দেখিয়ে ক্যাম্পে নিজস্ব বাহিনীর সদস্য সংগ্রহ করে থাকে সে। তাদের পরিচালিত সন্ত্রাসী বাহিনীতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে চাল ডাল তেল বিতরণ কাজ চালু করেছে ডালু বাহিনী।
শুধু তাই নয়, এ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর হাতে একাধিক রোহিঙ্গা অপহরণ ও খুন হয়েছে, কিন্তু কেউ ভয়ে, আতঙ্কে তার বিরুদ্ধ মামলা করার সাহস পায়নি৷ বর্তমানে কালোবাজারির পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা,স্বর্ণ ও চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে নাম লিখেছেন ডালু।
এমন তথ্য পেয়ে গত কয়েক মাস পূর্বে উখিয়ার বালুরমাঠ রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৬ হাজার কেজি কালোবাজারির মজুদকৃত চাল-ডাল,তৈল জব্দ করেছিল ১৪ এপিবিএন’র সদস্যরা।এর আগেও একাধিক অভিযানে ডালু মাঝির হেফাজত থেকে ত্রাণের মজুদ করা বিপুল পরিমাণ চাল,ডাল,তেল চিনি জব্দ,করা হয়েছিল।
এপিবিএন ১৪ এর অধিনায়ক এসপি মো. নাইমুল হক েিপিএম বলেন, এই চক্র রোহিঙ্গাদের জন্য বন্টনকৃত রেশনের খাদ্যদ্রব্য কালোবাজারি ও মজুদদারি করে। এরপর সেগুলো রোহিঙ্গা যুবকের মাঝে বণ্টন করে সন্ত্রাসী বাহিনীর জন্য সদস্য সংগ্রহ করে থাকেন।সাধারণ রোহিঙ্গারা ভয়ে আতংকে ডালু মাঝির হাতে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি ছিল।কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের অপরাধে জড়ালে আইনের আওতায় আনা হবে।এ ব্যাপারে এপিবিএন সদস্যরা সজাগ রয়েছে।ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে কোন গ্রুপকে ছাড় দেওয়া হবেনা।
এম/এস