খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার চাঁন্দোপাড়া নামক স্থানে বখাটদের দখলে রয়েছে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে যাত্রীদের সুবিধার্থে নির্মাণ করা যাত্রী ছাউনিটি।
যাত্রী ছাউনিটির অবস্থা দেখে বুঝে উঠা কষ্ট যে এটি একটা যাত্রী ছাউনি।বাহির থেকে দেখে কেউ হয়তো ভাববে এটা কোন ক্লাব,বাস যাত্রীদের বসা বা বিশ্রামের জন্য যাত্রী ছাউনি তৈরি হলেও পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা যাত্রী ছাউনিগুলোতে অবাধে চলছে নিশ্চিন্তায় মাদক সহ নানান অপকর্ম।এদিকে চাঁন্দোপাড়া রাস্তার মাথায় যাত্রী ছাউনির ভেতরে কেরামবোড বসিয়ে যাত্রীদের বসার স্থান দখলে রেখেছে এলাকার কিছু মাদক যুবকরা,এতে পরিবহনের জন্য অপেক্ষারত ছাত্র ছাত্রী (যাত্রী)রা পড়ছে চরম ভোগান্তিতে, রামগড় উপজেলার ঢাকা কলনীর চাঁন্দোপাড়া রাস্তার মুখে থাকা যাত্রী ছাউনি দেখলে বুঝার উপায় নেই যে, এটা একটি যাত্রী অপেক্ষারত বিশ্রাম ছাউনি। এছাড়া এ যাত্রী ছাউনি নিয়ে এলাবাসীর রয়েছে যথেষ্ট অভিযোগও।স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে চাঁন্দোপাড়া যাত্রী ছাউনিটি হচ্ছে দিনে ইভটিজিং,রাতে নেশার নিরাপদ জায়গা।ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনাও,বর্তমানে কেরামবোড খেলার আড্ডায় পড়ে এলাকার স্কুল কলেজের ছাত্ররা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের মতামতে জানা গেছে এসব যাত্রী ছাউনির প্রশাসনের কোন নজরধারী না থাকায় ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক দলের কিছু বখাটে যুবক এসব বাজে কাজে লিপ্ত রয়েছেন।
ঢাকা কলনী ও চাঁন্দোপাড়ার স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তিরা জানান , প্রতিদিন এখানে সকাল সন্ধা কিছু বাজে যুবক যাত্রী ছাউনি দখল করে কেরামবোড খেলছে,তাদের কারণে ঢাকাকলনী এবং চাঁন্দোপাড়ার ভিতর থেকে আসা মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে,সরকার যাত্রী ছাউনি দিয়েছে যাত্রী বসার জন্য কিন্তু বর্তমানে এই যাত্রী ছাউনি মাদক সেবনকারীদের দখলে রয়েছে,একাধিকবার বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি।বরং যারা অভিযোগ করেছে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে এই যুবকদের হাতে লাঞ্জিত হতে হয়েছে,এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে পুরো ঢাকাকলনী মাদক জুয়া গাঁজা খোঁরদের দখলে চলে যাবে। রামগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করে বলেন যাত্রীর ছাউনিতে বসার কোন সুযোগ নেই,গাড়ির জন্য অল্প কিছুক্ষণ অপেক্ষায় যাত্রী ছাউনিতে থাকা মাদক যুবকের নানা কুপ্রস্তাব শুনতে হয় আমাদের ,এদের বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ দিলেও লাভ হয় না।
রামগড় সরকারি কলেজের উপজাতি এক ছাত্রী জানান বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলে সাথে সাথে গাড়ি পাওয়া যায় না,আর যাত্রী ছাউনিতেও বসা যায় না বখাটদের কারণে সকাল- সন্ধা ওদের দখলে রয়েছে যাত্রী ছাউনি,আর বিশেষ করে মেয়েরা এসব বখাটেদের কবলে বেশির ভাগ পড়তে হয়,লোক লজ্জায় কিছু বলাও যায় না,প্রায় সময় বিরক্ত করে।এসব বখাট ছেলেরা বিভিন্ন দলের ক্ষমতাধর হওয়ার কারণে তাদের কিছু বলার সাহস পায়না কেউ।এদের কারণে এলাকার পাহাড়ি বাঙ্গালী পরিবারের মেয়েরা অনেকেই লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে।
চাঁন্দোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান প্রতিদিন সন্ধার পরে স্কুল মাঠ এবং বট গাছের নিচে এদল বখাটে মাদক গাঁজা সহ বিভিন্ন অপকর্ম এখানে চালিয়ে নিচ্ছে, এবং স্কুলের পাশে থাকা চা দোকানেও চলে কেরাম খেলার আড্ডা,এদের কারণে এলাকার উঠতি বয়সের মেয়েরা রয়েছে আতঙ্কে।
চাঁন্দাপাড়া রাস্তার মাথায় স্থানীয় চা দোকানের মালিক লিটনকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এই যাত্রী ছাউনিতে ওনি নিজেই কেরামবোড চালু করছেন।যাত্রীর ছাউনিতে এসব খেলা যায় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি এড়িয়ে গেছেন।
এদিকে রামগড় উপজেলা সচেন মহল ও সাধারণ জনগনের দাবি, রামগড় উপজেলার এসব যাত্রী ছাউনি,যাতে জনসাধারণ ব্যবহারে উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়,এবং নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করা হয়।
অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে রামগড় থানার ওসি (তদন্ত ) রাজিব চন্দ্র কর দৈনিক মানবাধিকার ক্রাইম বার্তা প্রতিনিধি কে বলেন ’অপরাধ কর্মকান্ডের বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাইনি, যখন অবগত হয়েছি ,আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো,এবং যাত্রী ছাউনিতে থাকা কেরামবোড বন্ধ করা হবে খুব দ্রুতই।