মোঃ শহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, রাঙ্গামাটি:
রাঙ্গামাটিতে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সেবাগ্রহীতার গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে (৩০ নভেম্বর) রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতাল মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ও রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: নূয়েন খীসা। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বদ্ধ পরিকর। স্থানীয় সন্তান হিসেবে তিনি স্বাস্থ্যসেবা মানোন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে রাঙ্গামাটি হাসপাতালের র্যাঙ্কিং ১৯ তম। সাধারণ মানুষ এখন হাসপাতালমূখী হচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালে দিন রাত্রি ২৪ ঘন্টা ডেলিভারী সেবা চালু আছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে এই সীমাবদ্ধতার মাঝে আমাদের কিছু সেবা প্রদানে ঘাটতি হয় । হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু করা হলে হাসপাতালের সংকট অনেকাংশে কমবে। সেবা দাতা এবং সেবা গ্রহীতারা সচেতনতার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে নিজ থেকে নাগরিক দায়িত্ব পালন করলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরো বাড়বে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সনাকের সাবেক সভাপতি অমলেন্দু হাওলাদার এর সভাপতিত্বে সনাক সদস্য রেজাউর রশীদ এর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সনাক সদস্য ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা। তিনি প্রকল্প সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের জন্য দুর্নীতি হ্রাস এবং সেবা প্রদান কার্যক্রমে শুদ্ধাচার বৃদ্ধি। প্রকল্পের বাস্তবায়নের খাতসমূহ যেমন-স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভূমি, পরিবেশ এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ইত্যাদি খাত এবং বিগত সময়ে স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রম সভাকে অবহিত করেন।
গণশুনানি অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনায় সেবাগ্রহীতারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন, নিয়মিত সকল ডাক্তারের শিডিউল অনুসারে রোগী দেখা, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা, ওষুধ কোম্পানির লোকদের অফিস চলাকালীন সময়ে হাসপাতালে উপস্থিতি সীমিত করা, হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, নার্স- আয়াদের খারাপ ব্যবহার, হাসপতালের বর্জ্য যেখানে সেখানে না ফেলা, ট্রলি- স্ট্রেচার ব্যবহার করার জন্য বকশিস বা ফি নেওয়া, হাসপাতালে সরকারিভাবে ব্লাড ব্যাংক স্থাপন, আউটডোর রোগীদের সবার জন্য সমভাবে ওষুধ সরবরাহ করা, অ্যাম্বুলেন্স এর সেবার মান বৃদ্ধি, বাথরুম পরিচ্ছন্ন রাখা, সকল লেনদেনে মানি রিশিট প্রদান করা, অতি প্রয়োজন না হলে রোগীদের অন্যত্র রেফার না করা, হাসপাতালের জন্য পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার ক্রয় করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উপস্থাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অমলেন্দু হাওলাদার বলেন, সনাক অনিয়ম/দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা করে। প্যাকটা প্রকল্প তেমনি একটি প্রকল্প যা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে কাজ করছে। এ প্রকল্পের আওতায় আমরা অ্যাকটিভ সিটিজেন গ্রæপ (এসিজি) এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছি। প্যাকটা প্রকল্পের অধীনে কমিউনিটি মনিটরিং এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি কমবে বলে আমরা আশা করি। সভায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: শওকত আকবর, সনাক সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য সাগরিকা রোয়াজা, সনাক সদস্য মোহাম্মদ আলী প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।