আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্ট, খাগড়াছড়িঃ
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার “সততা” পোলট্রি ফার্মে রানীক্ষেতের আক্রান্ত প্রায় ১৫০০০ হাজার মুরগী ! এসব রোগাক্রান্ত মুরগী প্রকাশ্যে মাইকিং করে কমদামে বিক্রি করায় সেখানকার পোলট্রি মালিকেরা রোগাক্রান্ত মুরগী বিক্রিতে রোগ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় পোলট্রি ব্যবসায়ীরা!
উপজেলার সদরস্থ বটতল-রহমান নগর সড়কে “সততা” পোলট্রি ফার্মের একটি সেডে ২৭/২৮ দিন বয়সী ১৫হাজার বয়লার মুরগী রানীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়েছে! ফলে এসব অসুস্থ মুরগী আশপাশ, স্থানীয় হোটেলে এবং শহরে কমদামে বিক্রি করেন সততা পোলট্রি কর্তৃপক্ষ! বিশেষ করে লোকালয়ে মিনি পিক-আপে মাইকিং করে ১২০০-১৪০০ গ্রাম ওজনের মুরগী ১০০ টাকায় পিচ হারে বিক্রি করায় পোলট্রি শিবিরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে! গত সোমবার থেকে প্রকাশ্যে মাইকিং করে মুরগী বিক্রির এক পর্যায়ে গতকাল বুধবার একসত্যাপাড়া এলাকায় মহি উদ্দীন নামক এক পোলট্রি ফার্মের মালিক তাতে বাধা দেয় এবং গাড়ী আটকিয়ে রাখে! মিনি পিক-আপে রোগাক্রান্ত মুরগী নিয়ে মো. মুজিব ও আবদুল্লাহ আল মামুন নামের দুই ব্যক্তি অসুসৃথ মুরগী বিক্রি করছেন! এ সময় পিক-আপে উঠে দেখা যায় সকাল থেকে গ্রামে গ্রামে মুরগী বিক্রি অবস্থায় অনেক মুরগী মরে যাওয়ায় তা গাড়ীর ভিতর পলিথিনে রাখা হয়েছে! এ সময় আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সকাল থেকে প্রায় মুরগী বিক্রি হয়েছে! প্রতিপিচ ১০০ টাকা! ফার্মে রোগ আসায় প্রচুর বয়লার মুরগী মারা যাওয়ায় পুঁজি তুলতে এভাবে বিক্রি করতে বলা হয়েছে! এলাকার পোলট্রি ফার্মের মালিক মো. মহি উদ্দীন বলেন, এভাবে অসুস্থ মুরগী বিক্রি করলে চারিদিকে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে! তা বন্ধ করা উচিত।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচরে আনা হলে কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা কামাল সততা পোল্ট্রি ফার্ম পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সদ্য মারা যাওয়া একটি মুরগী সিজার করেন। এতে “রানীক্ষেত” রোগ শনাক্ত হয়। এ সময় চিকিৎসক বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ না করায় রানীক্ষেত রোগে এসব মুরগী আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এখানকার পোলট্রি ফার্মগুলোতে রোগ-বালাই দেখা দিলে ফার্ম মালিকেরা প্রাণী সম্পদ অফিসকে অবহিত না করে তাঁদের ব্যবসায়ীক লাইনে উন্নত চিকিৎসার আশায় শহরকেন্দ্রিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়! তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমাদেরকে জানালে সঠিক পরামর্শ দিয়ে তড়িৎ চিকিৎসা বা পরামর্শ আমরা দিতে পারি।
এ সময় সততা পোলট্রির ম্যানাজার মো. লিটন বলেন, এই উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের ঘণঘণ লোডশেডিং, লো-ভোল্টেজে পোলট্রি শিল্পের আজ আমাদের অকাল! বিদ্যুতের ভেলকিবাজি ও চরম ভোগান্তিতে পড়ে আমরা সর্বশান্ত হচ্ছি! নিয়মিত মুরগী শ্বাসকষ্ট, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়! এভাবে হতে থাকলে পোলট্রি শিল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করে পথে বসতে হবে! আমরা বিদ্যুতের চরম ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই।