নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অস্বাভাবিক বা বাড়াবাড়ি খরচসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ ৩০ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বৈঠকে তারা প্রকল্পে কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক খরচের কথা স্বীকার করেছেন। তারা একমত হয়েছেন যে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এসব বিষয় আর মেনে নেয়া যাবে না।
এদিকে বৈঠকে উপস্থিত সচিবদের কাছে পরিকল্পনামন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যে অনলাইনে মিটিং হয়েছে, তাহলে আবার সিঙ্গাড়ার খরচ কেন?
তিনি বলেন, জুমের মাধ্যমে আমরা সিঙ্গাড়া পাঠাবো? এটা কি যথাযথ প্রশ্ন? এমন অযৌক্তিক বিষয় সাংবাদিকদের নজরে এসেছে। আপনাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। পার্চেজ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
বৈঠক শেষে দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনায় বাসায় বসে জুম মিটিং করলেন কেন? আপ্যায়ন ব্যয় করা লাগবে? প্রকল্পের আওতায় আপ্যায়ন ব্যয় আছে। তার মানে এই নয় যে অযৌক্তিকভাবে ব্যয় করতে হবে। প্রকল্পের আওতায় অযৌক্তিক আপ্যায়ন ব্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন। তিনি বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আপনারা (সাংবাদিকরা) রিপোর্ট করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট সবাই কথা দিয়েছেন, তাদের যেসব সুযোগ-সুবিধা, আইনকানুন আছে, সেগুলো তারা প্রয়োগ করবেন।
তিনি বলেন, সব অর্থ সরকারের নয়, জনগণের। জনগণের অর্থ যদি অপচয় হয় বা বেশি করি- এটা গ্রহণযোগ্য নয়। করোনা হোক বা না হোক, কোনো সময়ই জনগণের অর্থ নিয়ে নয় ছয় করা যাবে না।
এম এ মান্নান বলেন, আমরা সবাই স্বীকার করি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি আছে। ভুল হোক বা হিউম্যান ইরর হোক। কিন্তু বার বার একই ভুল গ্রহণযোগ্য নয়। সবাই মিলে আমরা আলোচনা করেছি, কীভাবে এটাকে বন্ধ করা যায়। এ বিষয়ে আমরা সবাই মিলে একমত হয়েছি, আমরা যার যার অবস্থান থেকে এটা মোকাবিলা করব। আমরা এ বছর থেকে কাজ শুরু করলাম, নতুন প্রকল্পগুলোর জন্য আমরা অনেকটা সচেতন হব।
এম এ মান্নান বলেন, পরিকল্পনা কমিশন আরও সচেতন হবে। আর যারা প্রকল্প তৈরি করবেন, তারা আগের তুলনায় অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করবেন। যাতে করে এ ধরনের কাজ আগামীতে আর না হয়। বিষয়গুলো আজকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা কমিশনের যারা সব প্রকল্প যাচাই-বাছাই করেন, তাদের অবজারভেশনে তারা ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করেন। সেগুলো তারা চিহ্নিত করেছেন। অন্য সচিব যারা ছিলেন, যারা প্রকল্প তৈরি করেন, বাস্তবায়ন করেন, তাদের শিক্ষণীয় ব্যাপারগুলো বললেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তারা যেহেতু সিনিয়র, তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে উল্লেখ করেছেন, কোথায় কীভাবে আরও ভালো করা যায়।