আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি, ক্যালসিয়াম, ক্যালরি, ফসফরাস ও চর্বিযুক্ত লেবু জাতীয় ফল মিষ্টান্ন সবুজ মাল্টায় ফ্রুট ব্যাগিং করে হলুদ রংয়ে বাজারজাত পরিদর্শন করেছেন লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের উপ- প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল কাইয়ুম মজুমদার। নতুন পদ্ধতি ব্যবহারে সময়োপযোগী ও ক্রেতা বান্ধব করায় প্রশংসায় ভূষিত হয়েছেন উদ্যোক্তা ও সুখী এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. এনামুল হক।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে মোট ৬০ হেক্টর টিলা ভূমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ফলন হয়েছে ১৫ হেক্টরে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হেক্টরে সাড়ে ৭ মে.টন। কিন্তু বাজারে কেমিক্যাল মিশ্রিত হলুদ মাল্টায় ক্রেতার আকর্ষণ বেশি থাকায় সবুজ মাল্টার বাজারজাতে লোকসান গুনছে চাষিরা! ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করা কষ্টদায়ক! এই যখন সবুজ মাল্টার বাজার পরিস্থিতি। ঠিক সে সময়ে উপজেলার কুমারী বড়টিলা কাটাবন এলাকায় সুখী এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. এনামুল হক তাঁর বাগানের ৫০০ মাল্টা গাছের মধ্যে পরিপক্ক ৫০০ সবুজ মাল্টায় পরীক্ষামূলক ফ্রুট ব্যাগিং করে হলুদ রং ধারণে সফল হয়েছেন! এতে করে ফ্রুট ব্যাগিংয়ে হলুদ রংয়ের মাল্টার চাহিদা বেড়ে গেছে বহুগুণ! শুধু তাই নয় সবুজ মাল্টার কেজি যেখানে ৫০-৫৫ টাকা! হলুদ রং হওয়ায় কেজি এখন ২০০ টাকা! এই খবর ইতোমধ্যে সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের পর কৃষিবিদের নজরে পড়েছে। ফলে ১৬ অক্টোবর সরজমিন পরিদর্শনে আসেন লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল কাইয়ুম মজুমদার, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হক, সহকারী প্রকল্প পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোহাম্মদ মাহফুযুল ইসলাম। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ।
এ সময় সুখী এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. এনামুল হক তাঁর নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে বলেন, পাহাড়ি মাটি লেবুজাতীয় ফসল উৎপাদন উপযোগী এবং ফল খুবই মিষ্টান্ন। বাজারে কেমিক্যাল মিশ্রিত হলুদ ফলে ক্রেতার নজর থাকায় সবুজ মাল্টা চাষিরা লোকসানের শিকার! ফলে মাল্টার স্বাদ ও রস অক্ষুণ্ণ রেখে রং পরিবর্তনে নতুন প্রযুক্তির ভাবণা নিয়ে প্রথমে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথের পরামর্শ করি এবং এই প্রথম ৫০০ মাল্টায় ফ্রুট ব্যাগিংয়ে হলুদ রং আনতে সক্ষম হই! ইতোমধ্যে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ফলে এখন বাংলাদেশ সরকারের কৃষিবিদেরা আমার নতুন প্রযুক্তি দেখতে আসেন।
এসময় লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল কাইয়ুম মজুমদার বলেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আগামীতে উপজেলার অন্যান্য চাষিরাও সবুজ মাল্টায় ফ্রুট ব্যাগিংয়ে হলুদ বর্ণ করে বাজারজাত করে লাভবানের সুযোগ রয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো এবং সময়োপযোগী উদ্ভাবন। এই প্রযুক্তি গবেষণা করে সারাদেশে সম্প্রসারণের বিষয়ে কৃষি বিভাগ কাজ করবে।