• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সোনাগাজীতে কৃষকদের মাঝে সার বীজ ও নগদ অর্থ  বিতরণ  গণপ্রকৌশল দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মাদ্রাসা শিক্ষা নৈতিক ও উত্তম চরিত্র গঠনেও ভূমিকা রাখে- ইউএনও মনজুর আলম মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তা বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের অভিযানে দুই বছর ছয় মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার বাঙ্গালহালিয়াতে রাধামদন গোপাল গিরিধারী সেবা কুঞ্জে অন্নকুট উৎসব সম্পন্ন রাজশাহী রেসিডেন্সিয়াল কলেজে নবীন বরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা কাপ্তাইয়ে ইউএনও এর বিদায় সংবর্ধনা নেত্রকোনায় জননন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিনে হিমু উৎসব জনগণের মন জয় করাই বিএনপি’র রাজনীতির লক্ষ্য মানিকছড়িতে ‘সম্প্রীতির বিশাল সমাবেশে’ ওয়াদুদ ভূঁইয়া গুইমারায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান খাগড়াছড়িতে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স এর সৌন্দর্য হাতছানি দিচ্ছে

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান (বান্দরবান) / ৪৮০ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান গুলোর অন্যতম বান্দরবানের লামার ‘মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স’ (Mirinja Parjatan Complex)। নান্দনিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এ স্থানটিতে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অধিনে লামা উপজেলা প্রশাসন একটি আকর্ষনীয় টুরিস্ট স্পট হিসেবে গড়ে তুলেছে। মিরিঞ্জা পর্যটন স্থানটি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২২৫০ ফুট উঁচু। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হয়েছে সাড়া জাগানো টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য। তাই লোকমুখে জায়গাটি এখন টাইটানিক পাহাড় হিসাবে অনেক পরিচিত। টাইটানিকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মনে পড়বে শত বছর আগের টাইটানিক জাহাজকে নিয়ে তৈরি কাহিনিচিত্র। একই স্থান থেকে সময়ের ব্যবধানে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখা যায়। যা কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে সূর্য ডোবার দৃশ্যকেও স্থান করে।

কবির চোখে তাকালে দেখবেন, মাথার ওপর নীল আকাশে মেঘের বিচরন। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা। ঘুরতে ঘুরতে হয়ত আপনি নিজেই কখনো ঢুকে যাবেন মেঘের ভেতরে। পাহাড়ের নিচে ঝরণাধারা, চূড়ায় আদিবাসীদের (ম্রো, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের) টংঘর, চারপাশে সবুজ গাছপালা। পর্যটকদের সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সুরম্য ‘গিরিদ্বার’ ও রেস্ট হাউস-কাম ওয়েটিং শেড ‘বনরত্না’। আপনজনকে নিয়ে নির্জনে বসে গল্প করার জন্য আছে দুই স্তরের গোলঘর ‘মালঞ্চ’। আছে টেলিস্কোপ ঘর ও প্ল্যাটফর্ম। জোছনারাতে চাঁদ দেখা যাবে গোলঘর থেকে। এক সময়ের দুর্গম পাহাড়ি লামা বর্তমানে কোলাহলপূর্ণ বিকাশমান পর্যটন শহর।

শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে মিনি শিশুপার্ক। পর্যটনের পূর্ব দিকের জোড়া সবুজ পাহাড় থেকে শোনা যায় প্রায় এক হাজার ফুট গভীর ঝিরি থেকে জল সিঞ্চনের বিরামহীন কলতান। ভ্রমণের সময় দেখা মেলে বনমোরগ, খরগোশ কিংবা মায়াবী বুনো হরিণের ছোটাছুটি। মিরিঞ্জায় খাওয়াদাওয়া ব্যবস্থা না থাকলেও পার্শ্ববর্তী রয়েছে লামা উপজেলা শহর। যেখানে থাকা খাওয়ার উভয় ব্যবস্থা রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা নিরাপদ একটি স্থান।

দিনের প্রথম ভাগে এলে এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স ঘুরে যে কেউ চাইলেই লামার অন্যান্য পর্যটন স্পট গুলো ঘুরে দেখতে পারেন। লামা উপজেলায় ঘোরার মত আরো কিছু পর্যটন স্পট রয়েছে। মিরিঞ্জা পাহাড়ের আরো কিছুটা সামনে গেলেই রয়েছে নবনির্মিত পর্যটন স্পট ‘কিছুক্ষণ’, ‘মিরিঞ্জা ভ্যালী’, লামা পৌর শহরের ‘তংথমাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট’, পৌর শহরের কাছাকাছি নুনানঝিরিস্থ ‘অনন্য রিসোর্ট’, দেড়শত বছর পুরানো ‘সাবেক বিলছড়ি বৌদ্ধ বিহার’, লামার সরই অবস্থিত ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’, প্রবাহমান মাতামুহুরী নদীর সৌন্দর্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পল্লী এবং অসংখ্য ঝর্ণা। দিনভর ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যায় ফিরতে পরেন লামা বাজারে।

কিভাবে যাবেনঃ রাজধানী ঢাকার ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ, রাজারবাগ ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের চিরিঙ্গা/চকরিয়ার টিকিট কাটুন। এরপর চিরিঙ্গা/চকরিয়া বাস টার্মিনাল থেকে বাস, চাঁদের গাড়ি বা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে চকরিয়া-লামা সড়কের মিরিঞ্জা পর্যটনে আসতে পারেন। অথবা কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম নামুন। চট্টগ্রাম থেকে বাস যোগে চিরিঙ্গা/চকরিয়া বাস টার্মিনালে আসুন। আর যারা ঢাকা থেকে বিমানে যেতে চান তারা ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার নামুন। সেখান থেকে চিরিঙ্গা/চকরিয়া বাস টার্মিনাল থেকে একই ভাবে যাওয়া যায়। চকরিয়া থেকে পর্যটনে আসতে সময় লাগবে ২৫ মিনিট।

কোথায় থাকবেনঃ সারাদিন মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সে ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় লামাবাহী বাস কিংবা চাঁদের গাড়ি করে উপজেলা সদরে যেতে পারবেন। সেখানে উন্নতমানের খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তংথমাং রিসোর্ট, অনন্য রিসোর্ট সহ আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল মিরিঞ্জা, হোটেল প্রিজন ও হোটেল সী-হিল। এখানে আপনি রাত্রী যাপন করতে পারেন। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি উন্নতমানের রেস্ট হাউজ রয়েছে।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স এর জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে পাওয়া বরাদ্দ থেকে কল্পতরু, ওয়াচস্পট নতুন করে নির্মাণ করেছি। টাইটানিকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট নির্মাণ ও আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি ফুলের চারারোপণসহ কিছু স্পট পরিত্যক্ত ছিল যা নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পর্যটনের পাশে দুই পাহাড়ের মাঝে একটি আধুনিক মানের লেক তৈরী করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মিরিঞ্জার কিছুটা পূর্বপাশে নতুন পর্যটন স্পট ‘কিছুক্ষণ’ নির্মাণ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ