একদিকে পাহাড় কাটছে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার রাস্ত।
বান্দরবানের লামা উপজেলায় পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের আইডিয়া ও কুতুবদিয়া গ্রামে নির্বিচারে পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, জনপ্রতিনিধি ও সরকার দলীয় লোকজন দিনে রাতে ৮/১০টি ডাম্পার ও ট্রাকে মাটি বহন করে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ির মালিকদের কাছে বিক্রি করছেন। অন্যদিকে এই মাটি বহনে ব্যবহৃত ভারি যানবাহনের কারণে ফাইতং ইউনিয়নের নয়া পাড়া হতে আইডিয়া ও কুতুবদিয়া গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার ব্রিকসলিং সড়কের এখন বেহালদশা।
আইডিয়া পাড়ার বাসিন্দা মোঃ হোছন, আনোয়ার হোসেন, কুতুবদিয়া পাড়ার মহিউদ্দিন, মনোয়ার হোসেন সহ অনেকে বলেন, মাটিবাহী ভারী ডাম্পার ও ট্রাক চলাচলে কাঁচা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। ট্রাকের চাকার চাপায় রাস্তায় নালার মতো তৈরি হয়েছে। হাটু পরিমাণ কাঁদা পথ চলতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয়রা আরো জানান, আইডিয়া গ্রামের রাস্তা নষ্ট করে মাটি বিক্রি করে ব্যবসা করছে অত্র গ্রামের ছৈয়দ হোসেন। তার সাথে তার ছেলে আবু তাহের জড়িত। বসতবাড়ি নির্মাণে প্রায় ৭০ ফুট উচু পাহাড় কেটে সমতল করার প্রক্রিয়া চলছে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় ও হাফেজখানার মাটি ভরাটের অজুহাতে পরিবেশের ক্ষতি করে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। আর এই পাহাড় কাটার মাটিভর্তি ট্রাক রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির দিনে কাদা রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, পাহাড় কাটার মত অবৈধ কাজে সহায়তা করছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সরকার দলীয় লোকজন। সরকারি নিষেধ অমান্য করে মাটি বিক্রি করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। আর বেহাল সড়কে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক এর সাথে। চেয়ারম্যান বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে তিনি অবগত নয়। এদিকে পাশে ফাইতং পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও তারা দেখেও কিছুই বলছেনা, এমন অভিযোগ করেন আইডিয়া ও কুতুবদিয়া গ্রামের লোকজন।
অবৈধ পাহাড় কাটার বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, দ্রুত পাহাড় কাটার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। পরিবেশের ক্ষতি করে যারা পাহাড় কাটছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করতে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক বলা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান জেলার সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দ্রুত পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে।