মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, (বান্দরবান)
বান্দরবানের লামা উপজেলা ও কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আন্ত:জেলা সীমানা নিয়ে এক ইউপি মেম্বারের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। অমীমাংসিত সীমানাকে পুঁজি করে চকরিয়ার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের মেম্বার মোঃ মিজান ব্যবসা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার নামে এই মেম্বার মোটাংকের টাকা হাতাচ্ছে। স্থানীয় কিছু মানুষকে ভূমির মালিক বানিয়ে দেয়ার নাম করে এই অপকর্ম করছে।
সরজমিনে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে পার্বত্য লামার বাসিন্দা সংক্ষুব্ধ বাছা মিয়া লামা কোর্টে একটি সিআর মামলা করেছিলেন, নং-৩/৮৭। ওই মামলায় তৎকালীন কাকারা ইউনিয়নের বর্তমানে বমুবিলছড়ির বাসিন্দা ১৩ জনকে বিবাদী করা হয়েছিল। এরা হলো, মনিরুজ্জামান, ছিদ্দিক আহামদ, আবদুল কুদ্দুছ, নুর আহামদ, ছাবের আহামদ, মঞ্জুরুল কাদের, মোহাম্মাদ মিয়া, আবদুল ছালাম, মোজাহের মিয়া, মোক্তার আহামদ, মাজাহের আহামদ, আবদুল লতিফ ও রশিদ আহামদ।
এর পর গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বাছা মিয়ার মালিকানা ও দখলীয় ভূমি নিয়ে সমস্যা করবেনা মর্মে বিবাদীগং আপোষ করেন। এর কিছুদিন পর আবদুল লতিফ উক্ত জমি নিয়ে পুনরায় বিরোধের চেষ্টা করলে, ১৯৯১ সালে লামা সাব জোনের পরামর্শে গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতা ও বান্দরবান স্থানীয় সরকার পরিষদ সদস্য উথোয়াই অং মার্মার উপস্থিতিতে আরেকটি অস্থায়ী এগ্রিমেন্ট হয়।
২৫/৬/১৯৯১ তারিখে করা ওই এগ্রিমেন্টে বিরোধ মিমাংসার জন্য বাছা মিয়ার নামীয় ও দখলী জমির কিছু অংশ অপর পক্ষকে বন্টন করে দেয়া হয়। শর্ত ছিল, পরস্পর বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিবেন। পরে উচ্চ আদালতের চুড়ান্ত আদেশ যেটা হবে, সেটা সবাই মেনে নিবেন।
এদিকে বমুবিলছড়ি ইউপি সদস্য মিজান মেম্বারগং দীর্ঘকাল পরে এসে এই বিষয়টি নিয়ে জোর প্রয়োগ করে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটাতে চাচ্ছে। মিজান মেম্বার জানায়, আন্তঃজেলা সীমানায় স্থাপনের জন্য সম্প্রতি সে ৫০টি পাকা পিলার তৈরি করেছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মিজান মেম্বার আরো জানান, ২৯ জুলাই/২৩ তারিখে লামা ও চকরিয়া উপজেলার এসিল্যান্ডগন সরেজমিন এসে তাকে এই নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলাপকালে তিঁনি জানান, ‘এডিসি স্যারের নির্দেশনায় লামার এসিল্যান্ড সরেজমিনে গিয়েছিল। কিন্তু কাউকে পিলার দেয়ার জন্য বলা হয়নি’। এ সময় উপস্থিত লামা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘চকরিয়ার এসিল্যান্ডসহ আমরা সরেজমিন গিয়েছি, তবে পিলার বা সীমানা নির্ধারণ করা হয় নাই। সেখানকার দু’পক্ষের লোকজন মিলে একটি রেখা তৈরি করতে বলা হয়’।
এর আগে গত ২০২২ সালের জুলাই মাসে বমুবিলছড়ি ইউপি সদস্য মিজান, সমতল জেলা কক্সবাজার চকরিয়ার অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে বিগত ৯ জুলাই /২২ তারিখে পার্বত্যাংশের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালায়।