বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মিজান এর বর্গা চাষি মিজান কর্তৃক ছৈয়দ আলম নামে এক অসহায় পরিবারকে ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় নিরাপত্তা দাবী ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই অসহায় পরিবার ২রা সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় লামা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের ছৈয়দ আলমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, ছেলে আরাফাত হোসেন, মেয়ে জান্নাতুন ফেরদৌস রুমি। এসময় লামা উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে জানান, আমরা লামা বন বিভাগের আওতাধীন বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে বমু রিজার্ভ ফরেস্ট ভূমিতে অংশিদার (ভূমিহীন) দরিদ্র প্রজা। আমার স্বামী একজন মেরুদণ্ড ক্ষতজনিত রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। আমাদের ২ ছেলে ৬ মেয়ে নিয়েবখুব কষ্টে সংসার চলে। বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পানিস্যাবিল সরকারি রিজার্ভ ভূমির টিলায় আমরা সামাজিক বনায়নের অংশিদার হিসেবে বসবাস করি। সরকারি বাগান দেখা শুনা ও পরিচর্চা করে সংরক্ষিত ভূমির পতিত জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি।
বিগত দিনে আমার স্বামীর চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্য আমাদের ভোগদখলীয় কিছু জমি দুবাই প্রবাসী নুরুল হোছাইন নামের একজনকে বন্দক প্রদান করি। শর্তানুযায়ী কিছুদিন আগে আমরা সেই বন্ধকি জমি ছাড়াতে গেলে নুরুল হোছাইন আমাদের জমি ফেরত দিতে রাজি হচ্ছেনা। আমরা জানতে পারি নুরুল হোছাইন উক্ত জমি তার শ্যালক ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মিজানকে ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিজান মেম্বার আমাদেরকে বিভিন্ন সময় নানান ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে।
আমার এক মেয়ে সরকারি মাতামুহুরী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। মিজান মেম্বারের লেলিয়ে দেয়া তার বর্গা চাষি মিজান, পিতা মোহাম্মদ আলী আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। গতকাল ১লা সেপ্টেম্বর আমাদের পরিবারে সাথে সরকারি বমুরিজার্ভ ভূমি সংক্রান্ত চলমান বিরোধ ও চাষি মিজান কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে লামা জেলা পরিষদ গেষ্ট হাউসে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠক হাজির হওয়ার জন্য সকাল থেকে আমরা
সবাই লামা বাজারে যাই। দুপুরের দিকে আমি আমার মেয়েকে বাড়ি চলে যেতে বলি। মেয়ে বাড়ি ফেরার পথে লামা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড গজালিয়া জীপ স্টেশনে পৌঁছলে
মিজান মেম্বারের ঈশারায় তার বর্গা চাষি মিজান তার গতিরোধ করে।
সে বলে, আমার বিরুদ্ধে লামা পৌর মেয়রের কাছে বিচার দিচস, এর আগে ধর্ষণ করি নাই, এবার তোকে ধর্ষণ করে জেলে যাবো। এসময় খুব ভয় পেয়ে মেয়ে আমাকে মোবাইলে জানায়। আমি নিজেও ভয় পেয়ে তাৎক্ষনিক বিষয়টা কাউকে জানাই নাই, শুধু পারিবারিকভাবে আলোচনা করি। ওই হুমকির পর আমার মেয়ে তড়িগড়ি করে একটি অটোরিকশা নিয়ে ঘরে চলে যায় এবং সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে। এরপর লামা বাজার গেস্ট হাউসে বৈঠক শেষে রাতে হাফেজিয়া পাড়ায় ৫নং ওয়ার্ড পানিস্যাবিল দোকানে বসে সেখানে নতুন বাজার আইয়ুবের দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে আমার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে চাষি মিজান আবারো ধর্ষন করবে মর্মে একই ভাষায় হুমকি দেয়। এসব হুমকি ও উচ্ছৃঙ্খল কথা বার্তা পার্শ্বের দোকানদার আইয়ুব মিয়া সব শুনতে পায়।
আমাদের সাথে মিজান মেম্বার পিতা শামসুল আলম এর সাথে রিজার্ভের জমি বন্দক সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে মিজানুর রহমান মেম্বার গং আমাদেরকে মিথ্যা মামলা, হামলা, প্রাণনাশ, ধর্ষণসহ আমার পরিবার পরিজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলছে। এই অবস্থায় আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আমরা এসব অন্যায় ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আইনের কাছে আশ্রয় নিব।