চিকিৎসাসেবা নিতে বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন বিএনপির তিন সিনিয়র নেতা। তারা হলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মির্জা আব্বাস। ২৬ আগস্ট চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট চিকিৎসার জন্য ঢাকা ত্যাগ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও মেয়ে মির্জা সাফারুহ।
মির্জা ফখরুল ঢাকা ত্যাদের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টে দাবি করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছেন মির্জা ফখরুল। সে টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পোস্টটিতে মির্জা ফখরুল ও তার স্ত্রী রাহাত আরার ছবির সঙ্গে একটি চেকের ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের চেকটিতে তারিখ দেওয়া হয়েছে ২০ আগস্টের। আর টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ৫০ লাখ। দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেক এটি।
তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ‘রিউমার স্ক্যানার’ তাদের ফেসবুক পেজে লিখেছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে মির্জা ফখরুলের বিদেশ ভ্রমণ দাবিতে ভাইরাল চেকটি ভুয়া।’ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম ও নম্বরের মিল না থাকাসহ একাধিক কারণ দেখিয়ে চেকটিকে ‘ভুয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরানোর নির্দেশ
অন্যদিকে চেকের ছবিটি ভুয়া বলে জানিয়েছে বিএনপির মিডিয়া সেলও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া চেকের ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে রোববার রাতে মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এটি আওয়ামী লীগের একটি পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা। চলমান আন্দোলন সরকার নিপীড়ন-নির্যাতন করে কোনোভাবেই দমন করতে পারছে না। তাই সরকার নানা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। তাদের কাজই গুজব তৈরি করা এবং মানুষের চরিত্র হনন করা।
এটাকে খুবই সস্তা প্রোপাগান্ডা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা একটা অপশক্তি। অপশক্তির যে কাজ, সেটাই তারা করছে। এটা নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতেও আমার রুচিতে বাধে। দেশের মানুষ জানে, তারা প্রোপাগান্ডা চালানোর মেশিন। কোনো প্রোপাগান্ডাই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে বিপথগামী, বিভ্রান্ত করতে ও নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে ফেলতে তারা খুব পরিকল্পিতভাবে কাজটা করছে।
৭৬ বছর বয়সী মির্জা ফখরুল এর আগেও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন। সবশেষ ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশটিতে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় তার ঘাড়ের ইন্টারন্যাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়লে মুক্তির পর সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করান তিনি। এরপর প্রতিবছরই চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে যেতে হয়।