মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবান
পৃথিবীর যত বয়স হচ্ছে, দিনে দিনে মানুষ গুলো কেমন জানি অমানুষ হয়ে যাচ্ছে। স্বার্থ মানুষকে অন্ধ বানিয়েছে। স্বার্থের এই বেড়াজালে আপন হয়েছে পর। কখনো মানব সমাজে এমন কিছু স্বার্থপরতার ঘটনা ঘটে যা সভ্যতার জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে চিরন্তন। তেমনি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড শামুকছড়া গ্রামে।
বড় বোন ফোরকান আরা বেগম (৪৯) তার দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে পৈত্রিক সম্পদের বিষয়ে আপন ছোট বোনকে কুপিয়ে জখম করেছে। আহত ছোট বোন রওশন আরা বেগম (৪৫) রক্তাক্ত শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছে লামা সরকারি হাসপাতালে। সে শামুকছড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠে।
আহত রওশন আরা বেগমের ছেলে আবুল হোসেন বলেন, সকালে আমার মা টয়লেটে যাওয়ার রাস্তায় ঝোঁপজঙ্গল হলে তা পরিষ্কার করতে যায়। তখন আমার বড় খালা ফোরকান আরা বেগম বাঁধা দেয়। সে বলে এখানে তোদের কোন জায়গা নাই, কেন পরিষ্কার করছিস। আমার মা বলে বাবার ভিটায় সবাই থাকি। আমিও পৈত্রিক অংশ পাবো। সম্পদের বিষয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে আমার খালা তার দুই মেয়ে রাশেদা বেগম (২২) ও রেখা মনি (১৮) কে নিয়ে আমার মাকে মারধর করে। এসময় আমার খালা দা দিয়ে কুপিয়ে মায়ের মাথায় গুরুতর জখম করে। আমরা খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
আহতের ভাই ছাবের আহমদ বলেন, পৈত্রিক সম্পদের এখনো ভাগবন্টন হয়নি। এখনি জায়গা নিয়ে বড় হয়ে ছোট বোনকে মারার বিষয়টি ন্যাক্কারজনক। ফোরকান আরা বেগমের স্বামী আবুল নছর ও তার ছেলে জিয়াবুল হোসেন এর নির্দেশে দুই ভাগিনী নিয়ে বড় বোন ফোরকান আরেক বোন রওশন কে মেরেছে। কিছু বার্মাইয়া লোকজন দিয়ে তারা নিয়মিত আমার বোনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এই বিষয়ে জানতে ফোরকান আরা বেগমের স্বামী আবুল নছরের মুঠোফোনে কল দিলে সংযোগ না দেয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ সোলেমান বলেন, রওশন আরা বেগমের মাথায় কুপের চিহ্ন আছে। সেলাই করা হয়েছে। শরীরেও মারধরের আঘাত আছে। হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার জিয়াবুল হক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দুঃখজনক ঘটনা। নিজেদের ঘরে ঘরে এমন ঘটনা মেনে নেয়া যায়না। চিকিৎসা শেষে দুইপক্ষ চাইলে মীমাংসা করে দেয়া হবে।