বান্দরবানের লামায় বন্য হাতির আক্রমণে ধ্বংস হয়েছে সৃজনশীল ২টি কলা বাগানের ১৫০টি ফলনশীল কলাগাছ। গত চারদিন ধরে উপজেলার সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি এলাকাজুড়ে পাহাড় ও লোকালয়ে তান্ডব চালায় বন্যহাতির পাল। এতে বাগানী জসিম উদ্দিনের ২টি কলা বাগান ও আব্দুর রাজ্জাক নামে এক কৃষকের বসতবাড়ি নষ্ট করে হাতির পাল। কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, তার কলা বাগানের তান্ডব চালিয়ে হাতির পাল তার প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।
বাগান মালিক মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, গত চারদিন ধরে হাতির পাল টংগঝিরি পাহাড়ি অঞ্চলে দফায় দফায় কলা বাগানে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। কলা কেয়ে শত শত কলা গাছ উপড়ে ফেলেছে। এছাড়া ধানের ক্ষেত, পেঁপে বাগান ও আখ ক্ষেতেও আক্রমণ চালিয়েছে হাতির পাল। ফলনশীল ১৫০টি গাছ উপড়ে ফেলে ও অন্যান্য বাগান-ক্ষেত নষ্ট করে হাতির তার দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে। দীর্ঘদিন পরিশ্রমের ফলে তিল তিল করে গড়ে তুলেছি শখের কলা বাগান। বন্য হাতির আক্রমণে তা ধ্বংস হয়ে গেছে। সাজানো গোছানো বাগানটি এভাবে নষ্ট করলেও বন বিভাগ হাতি তাড়াতে সহায়তা করেনি।
এদিকে টংগঝিরি এলাকার বাসিন্দা কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বন্য হাতির পাল আক্রমণ চালিয়ে তার বসতবাড়ি ভেঙ্গে তার প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে। প্রতিরাতে আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি। কখন আমাদের উপর হামলা করে হাতির পাল। তিনি আরো বলেন, সরই এলাকায় মন্ত্রীর বাগান সহ অনেক বড় বড় কোম্পানীরা শত শত একর বাগানের নামে হাতির চলাচল পথে কাঁটার তারের বেঁড়া দেয়ার কারণে হাতি এদিকে হামলা করছে।
লামা পরিবেশ আন্দোলন কমিটির সভাপতি এম রুহুল আমিন বলেন, পাহাড় কেটে সড়ক ও নতুন বাড়িঘর নির্মাণের কারণে জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় হাতির বিচরণক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাগান ও লোকালয়ে এসে হাতি ক্ষয়-ক্ষতি করছে।
বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতির আবাসস্থল ও খাদ্য কমে যাওয়া, চলাচলের পথ বাধাগ্রস্ত, সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া ও ফাঁদ পেতে হাতি হত্যাসহ নানা কারণে লোকালয়ে নেমে আসছে বন্য হাতির পাল।
লামা বন বিভাগের ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম রেজাউল ইসলাম বলেন, বন্য হাতির পালটি সরাতে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমকে দ্রæত পাঠাবো। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীকে আমরা বন বিভাগের ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছি।