রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রহস্যজনক ভাবে একটি ভবনের ৮ তলার থাইগ্লাসের জানালা দিয়ে পড়ে ফেরদৌসী (৮) নামে এক গৃহকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। রহস্যজনক এ ঘটনার উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
শুক্রবার (৪আগষ্ট) বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
আহত ওই গৃহকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই ভবনের ম্যানেজার আদিল বলেন, আমরা যতটুকু জানি ৮ তলা থেকে একটি মেয়ে দুইতলায় আমাদের একটি শেড আছে তার উপরে পড়ে। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করি। ভোররাতের দিকে ওই মেয়েটির যৌনাঙ্গে একটি অপারেশন হয়। কিভাবে ওই মেয়েটি পড়ে গেল সেই বিষয়টি আমরা কিছু বলতে পারছিনা। কার বাসায় ভাড়া থাকে সেটা তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কে কার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে আসলো সে বিষয়টি তো আমাদের জানার কথা নয়। পরে আমি ভর্তি করে দিয়ে বাসায় চলে এসেছি।
আহত শিশুটির মা জোসনা বেগম বলেন, আমার মেয়ে কয়েকদিন আগে ঢাকায় একটি বাসায় কাজে আসে। আমার কাছে খালি একটি মোবাইল নাম্বার আছে কার বাসায় কাজ করছে সেটি আমি বলতে পারি না। আমি খবর পেয়ে ঢাকায় এসে শুনেছি আমার মেয়ে আট তলা থেকে পড়ে গিয়েছিল। তার একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে এর বেশি আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, গতকাল বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে ওই শিশুটি অষ্টম তলার ড্রয়িং রুমের নিরাপত্তা গ্রিল বিহীন থাই গ্লাসের জানালা দিয়ে পড়ে যায়। পরে তারা নিজেরাই ওই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ঘটনার বিষয়টি তারা পুলিশকে অবহিত করেনি। পরে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে জানতে পারি ওই শিশুটিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর আমরা এক অফিসারকে পাঠালে জানতে পারি আহত শিশুদের ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।পরে ভোর রাতের দিকে ওই শিশুটির যৌনাঙ্গে একটি অস্ত্রোপচার হয়। আট তলা থেকে একটি শিশু পড়ে গেল কিন্তু তার শরীরে তেমন কোন আঘাতে চিহ্ন নেই অথচ তার যৌনাঙ্গে একটি অস্ত্রোপচার হল বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৪-৫ দিন আগে ওই মেয়েটি সৈয়দ আশফাকুল হক নামে এক ব্যক্তির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে আসে। তবে ওই গৃহকর্মী কিভাবে আট তলা থেকে পড়ে গেল সে বিষয়টি এখনো আমরা জানতে পারিনি।তারা যেভাবে বিষয়টি আমাদের কাছে গোপন করছেন তাতে ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। মেয়েটির জ্ঞান ফিরলে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি আমরা জানতে পারবো।
এদিকে পুলিশের একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, মেয়েটি মোহাম্মদপুর থানাধীন শাহাজান রোডের ২/৭ বাসার ৮/সি ফ্ল্যাটের আট তলা থেকে পড়ে গেল অথচ তার শরীরের তেমন কোন ইনজুরি হয়নি। কিন্তু তার যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচার করা হলো। বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে। ওই বাসার গৃহকর্তা সৈয়দ আশফাকুল হক ইংরেজি একটি জাতীয় পত্রিকার প্রভাবশালী নির্বাহী সম্পাদক হওয়ায় বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে শিশুটি জরুরি বিভাগের অবজারভেশন রুমে চিকিৎসাধীন আছে।ওই মেয়েটির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানা এলাকায়।ওই শিশু গৃহকর্মীর অস্ত্রপচার করেছেন ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তার মৌসুমি ও ডাক্তার মৌমী এবং অন্য আর একজন ডাক্তার।