• বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মহালছড়ি থানা পুলিশের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কাপ্তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক যাকাত বিতরণ বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বান্দরবানে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানিকছড়ি বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বিনম্র শ্রদ্ধা ভালোবাসায় মানিকছড়িতে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন যথাযথ মর্যাদায় মহালছড়িতে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা দিবস ২০২৫ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গুইমারা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নানা আয়োজনে কাপ্তাইয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন  মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা বিতরণ করলেন হাবীব আজম লামায় যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালিত খাগড়াছড়িতে বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণে মধ্য দিয়ে ২৬শে মার্চ পালিত মহালছড়ি রেড ক্রিসেন্টের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ

সাইফুলের চোখ কাঁটা চামচ দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়

মাসুদ রানা, স্টাফ রিপোর্টার / ২০১ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩

মাদক কারবারিদের গোপন তথ্য দেয়ায় ঢাকার কেরানীগঞ্জে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সাইফুল ইসলাম (২৬) নামে এক ব্যবসায়ীকে গুরুতর জখম করে কাঁটা চামচ দিয়ে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয় বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

খন্দকার মঈন বলেন, এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রাজনসহ সরাসরি জড়িত ৭ জনকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১০।

মঈন জানান, রোববার (৩০ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় খেজুরবাগ স্কুল রোডে পৌঁছালে পথরোধ করে ভিকটিম সাইফুলকে ক্রিকেট ব্যাট, ব্যাটন, লোহার রড় ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকেন দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে গেলে রাজন পাশের একটি দোকান থেকে কাঁটা চামচ এনে সাইফুলের চোখ নৃশংসভাবে উপড়ে ফেলেন।

তিনি বলেন, সাইফুলের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয়রা ভিকটিমকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মঈন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র‌্যাব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর সাইফুল হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. রাজন হোসেনসহ (৩১) সাতজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন– জানে আলম (৩৬), মো. সুমন ওরফে গর্দা সুমন (২৫), লিটন হোসেন (২৬), মো. দিপু (২৩), সরোয়ার আকন্দ (২৬) এবং মো. সজীব (২৯)। উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুচালো লোহার রড, একটি ভাঙা ক্রিকেট ব্যাট, একটি ব্যাটন ও ছয়টি মোবাইল ফোন।

গ্রেফতারদের দেয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে কমান্ডার মঈন বলেন, সাইফুল দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন এবং সাতপাখি রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। গ্রেফতার আসামিরা রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন।

তিনি বলেন, সাইফুল ছিল এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ। মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতেন। তিনি বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও মাদক করবার সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা করেন। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় মাদক কারবারি ও অন্যান্যরা সাইফুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার রাজন গত ২৮ জুন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে গ্রেফতার হয় এবং ধারণা করে যে, তার গ্রেফতারের পেছনে সাইফুলের হাত রয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতার জানে আলম, সুমন ও তার মা আগে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পেছনেও সাইফুলের হাত রয়েছে বলে তারা ধারণা করেন।

গ্রেফতার রাজন গত ১৯ জুলাই মুক্তি পেয়ে গ্রেফতার জানে আলম, সুমন ও অন্য সহযোগীদের নিয়ে ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পিত করেন এবং গত ৩০ জুলাই রাতে সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যান।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডের পর এলাকা থেকে পালিয়ে কেরাণীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। গ্রেফতাররা এলাকায় মাদক কারবার ও অর্থের বিনিময়ে সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতেন বলে জানা যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার রাজন স্থানীয় একটি রিকশা গ্যারেজ পরিচালনা করতেন। পাশাপাশি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। রাজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, বিস্ফোরক দ্রব্য ও চুরিসহ পাঁচটির বেশি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার জানে আলম রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পাশাপাশি তিনি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সাইফুল হত্যাকাণ্ডে রাজনের অন্যতম সহযোগী জানে আলম। হত্যাকাণ্ডের সময় জানে আলম ভিকটিম সাইফুলকে ব্যাটন দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন। তার বিরুদ্ধেও অস্ত্র, মাদক, বিস্ফোরক দ্রব্য ও চুরিসহ চারটির বেশি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার সুমন কাঠ কাটা শ্রমিকের কাজ করতেন। পাশাপাশি তিনি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ভিকটিম সাইফুল হত্যাকাণ্ডে রাজনের অন্যতম সহযোগী ছিলেন সুমন। তিনি ভিকটিম সাইফুলকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মাথায় গুরুতর জখম করেন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি ও মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটির বেশি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীব ভিকটিম সাইফুল হত্যাকাণ্ডে রাজনের সহযোগী ছিলেন। গ্রেপ্তার লিটন মুদ্রাক্ষরিক, গ্রেপ্তার দিপু ও সজীব জাহাজ ভাঙার শ্রমিক এবং সরোয়ার রং মিস্ত্রির কাজ করেন।

এছাড়াও তারা গ্রেফতার রাজনের নেতৃত্বে এলাকায় মাদক, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে জানা যায়।

হত্যাকাণ্ডের সময় গ্রেফতার লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীব লাঠি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমকে এলোপাথাড়ি আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। তাদের বিরুদ্ধে মাদক ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ