ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নুহ জেলায় হিন্দুদের দুই পক্ষের সহিংসতার কয়েক ঘণ্টা পর পাশের গুরুগ্রামে এক মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও গুলি চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালের এ ঘটনায় মসজিদটির সহকারী ইমাম নিহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক গণামাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিহত ১৯ বছর বয়সী ইমামের নাম সাদ বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তিনি গুরুগ্রামের ৫৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত আঞ্জুমান জামা মসজিদের ইমাম ছিলেন। এ ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত তিনজনের মধ্যে একজন আহত হয়েছেন এবং দুজন অক্ষত রয়েছেন।
হরিয়ানা রাজ্যের উত্তরাংশের প্রতিবেশী নুহ জেলায় সহিংসতার একদিন পরে মঙ্গলবার ভোরে মসজিদটি আক্রমণের শিকার হয়।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নীতীশ আগরওয়াল সাংবাদিকদের বলেছেন, ৫০ থেকে ৬০ জন দুর্বৃত্তের একটি দল মঙ্গলবার ভোররাতে আঞ্জুমান জামা মসজিদে গুলি ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় একজন নিহত ও অন্যজন আহত হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
গুরুগ্রামে সোমবার (৩১ জুলাই) দিনভর উত্তেজনা চলছিল। হিন্দু জনতা রাস্তায় মহড়া দেয়, ছোট ছোট খাবারের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে এবং ভাংচুর করে ও আগুন দেয়- যার বেশিরভাগই ছিল মুসলমানদের।
এদিকে, ভারতের বাংলা গণমাধ্যম এই সময় জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গুরুগ্রাম সংলগ্ন নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রাকে কেন্দ্র করে। বজরং দলের এক সদস্য মনু মানেসর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। যা ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। এই ব্যক্তি স্বঘোষিত গোরক্ষক এবং তাঁর বিরুদ্ধে খুনেরও অভিযোগ রয়েছে। মিছিলে তাঁর থাকার কথা শুনে এবং কিছু সাগরেদের উপস্থিতি দেখে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
গুরুগ্রাম-আলোয়াড় জাতীয় সড়ক মিছিল আটকানোর অভিযোগ ওঠে। সেই থেকেই অশান্তি শুরু হয়। গাড়ি-বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, দোকানপাট জ্বালানো এবং নির্বিচারে গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সেখানে এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে একের পর এক বাস-গাড়ি-বাইকে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে দোকান। গুরুগ্রামে ইমামের মৃত্যু নিয়ে নিহতের সংখ্যা চারে দাঁড়াল।