বাঙালির সবচেয়ে শোকের মাস আগস্ট। এ মাসেই সপরিবারে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চালানো হয় গ্রেনেড হামলা। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেলেও, নিহত হন আইভী রহমানসহ ২৪ নেতা-কর্মী।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, অগণতান্ত্রিক, স্বাধীনতাবিরোধীদের রুখতে আগস্ট এখন শুধু শোক নয়, শক্তি-শপথে বলীয়ান হওয়ার মাস।
বিশাল হৃদয়ের বঙ্গবন্ধু বিশ্বাসই করতেন না কোনো বাঙালি তাঁকে হত্যা করতে পারে। তাই, সতর্ক বার্তা পেলেও সুরক্ষিত বঙ্গভবনে না থেকে ছিলেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। এ বাড়িতেই ৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালোরাতে, স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একদল বিপথগামী সেনা সদস্য হত্যা করে বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বড় ছেলে শেখ কামাল, মেঝ ছেলে শেখ জামালকে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করতেও হাত কাঁপেনি ঘাতকদের। খুনিদের হাত থেকে রেহাই পাননি সদ্য বিবাহিতা সুলতানা কামাল ও রোজী জামালও।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, তৎকালীন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন দু-একজন অফিসার ছাড়া প্রায় সবাই জানতেন, এ রকম একটি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডটা অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের মিলে হয়েছে। তারা একটি আদর্শকে সম্পূর্ণ উৎখাত করতে চায়।
অধ্যাপক ড. মুনতাসীর আরও বলেন, এটার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে, তাঁর সরকার এটির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পৃথিবীতে এ রকম ঘটনা কখনো ঘটেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দেশটা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে রুপান্তরিত হয়েছে। এই দেশের স্থপতি প্রতিষ্ঠাতা তাঁকে আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে স্বপরিবারের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
উপউপাচার্য বলেন, আগস্ট এক দিকে শোকের মাস, আরেক দিকে শোক থেকে সাহস সঞ্চয় করারও একটা মাস।
এই আগস্টেই চালানো হয় আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলায় নিহত হন আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ নেতা-কর্মী। মূল লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা হলেও, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি।