বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে এ উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট ঘাতকরা শুধু হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি। তারা দেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নামটাও মুছে দিয়েছিল। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে এ দেশের মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল বাংলাদেশে। ৭ মার্চের যে ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, সেই ভাষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। স্বাধীনতার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে নস্যাৎ করে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করা হয়েছিল, যেসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছিল তাদের কারাগার থেকে মুক্ত করে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষের যদি আপনজন খুন হয়, তবে তারা বিচার চায়। কিন্তু আমরা ১৫ আগস্ট যারা আপনজন হারিয়েছিলাম, আমাদের বিচার চাওয়ার কোনো অধিকারই ছিল না। এমনকি মামলা করারও অধিকার ছিল না। উল্টো সেই খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। শুধু তাই না, জিয়াউর রহমান তাদের পুরস্কৃত করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে, সেটাকে আবার ভোট কারচুপির মাধ্যমে সংসদে পাস করা হয়। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে সেই ফারুককে (বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুক) ফ্রিডম পার্টি তৈরি করা ও রাজনীতি করার সুযোগ দেয়, রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোট চুরি করে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করে। যেই নির্বাচনে ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়েনি। জনগণের ভোট চুরি করে কর্নেল রশিদকে তিনি সংসদের বিরোধী দলের আসনে বসায় এবং হুদাকে সংসদ সদস্য করেন। খুনিদের উৎসাহিত করে একের পর একে অমানবিক কাজ করে গেছেন। আর বাংলাদেশকে জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য বারবার বাধা এসেছে। সেই বাধা দিয়েছে ওই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের যারা মাস্টার প্রভু। তারা কিন্তু এই চক্রান্তে এখনও লিপ্ত। আমি যখন দেশে ফিরি তখন প্রতি পদে পদে বাধা এসেছে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হতে হয়েছে। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগকে তারা কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে দেবে না। সেইসব প্রতিবন্ধকতা পার হয়েই কিন্তু আজকে আমরা শুধু ক্ষমতায় আসা না, আমরা প্রমাণ করেছি যে—আওয়ামী লীগই পারে এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে।