ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ৯টা ছুঁই ছুঁই। শান্তা (ছদ্মনাম) অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। এর পর গণপরিবহনের জন্য দাঁড়ান শান্তিনগর মোড়ে। গন্তব্যস্থল মতিঝিলের অফিসপাড়া। কিন্তু মতিঝিলের দিকে যাওয়া কোনো গণপরিবহনেই তিনি উঠতে পারছেন না। কারণ, যাত্রী বেশি অজুহাত দিয়ে বাসটির হেলপার তাঁকে নিচ্ছেন না। যদিও যাওয়ার পথে বাসে করে নিয়ে যাচ্ছেন কিছু পুরুষ যাত্রীকে। আবার ঠেলেঠুলে বাসে উঠলেও ব্যস্ত সময়ে বাসের ভেতর স্বস্তি পান না।
গণপরিবহনে নারীদের ভোগান্তি:-
এটি শুধু শান্তার বাস্তবতা নয়। প্রায় প্রত্যেক কর্মজীবী নারীই প্রতিটি কর্মদিবসে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ যাত্রীরা ঠিকই বাসে উঠে পৌঁছে যাচ্ছেন যে যার গন্তব্যে। কিন্তু দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও শান্তার মতো নারী যাত্রীদের কাছে তা সোনার হরিণ হয়েই থাকে। কোনো কোনো দিন হয়তো অনেক কষ্টে তারা ভিড় ঠেলে বাসে ওঠেন, কিন্তু বাসের ভেতরেও তাঁদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। বাসে বসতে হয় ড্রাইভারের পাশে ইঞ্জিনের ওপর, যেখানে গরমে বসে থাকা দুষ্কর। আর বসবার সিট না থাকলে যেতে হয় দাঁড়িয়ে। বেশি ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকলে অনেক পুরুষ যাত্রী আবার ইচ্ছে করে ধাক্কা দেন। আবার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেওয়ারও চেষ্টা করেন। এমন পরিস্থিতিতে কোনো এক নারী হয়তো বলে বসেন, ‘ভাই সরে দাড়াঁন, গায়ের ওপর চলে আসছেন তো।’ এই কথার প্রত্যুত্তরে সেই নারীকে শুনতে হয় ‘গায়ে ধাক্কা লাগলে লোকাল বাসে উঠছেন কেন? নিজে গাড়ি কিনে অফিসে যান।’
পাবলিক বাসে যাতায়াত করে দেশের বেশির ভাগ নারী এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। শুধু কি পাবলিক বাস? রাস্তাঘাট, ফুটপাত, দৈনন্দিন চলাফেরার জায়গায় প্রতিনিয়ত নারীরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। এগুলো নারীদের জীবনে যেন নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিসংখ্যান কী বলে:-
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আঁচল ফাউন্ডেশন। গত বছরের জুন মাসে আঁচল ফাউন্ডেশন আজিমপুর, মিরপুর, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, বারিধারাসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী নারী ও কিছুসংখ্যক গৃহবধূর ওপর জরিপ পরিচালনা করে। জরিপের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রাজধানীতে গণপরিবহনে গত ৬ মাসে ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ কিশোরী ও তরুণী বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হন। এর মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশকে যৌন হয়রানির শিকার হন। ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ বুলিং, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ সামাজিক বৈষম্য, ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ লিঙ্গ বৈষম্য এবং ৮ দশমিক ২ শতাংশের সঙ্গে বডি শেমিংয়ের শিকার হন।
আইন কি বলে?
গণপরিবহনে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয়। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের কোনো ঘটনা সামনে এলে অনেকে বেশ নিন্দা জানানও। যদিও এই নিন্দা বিবৃতি দেওয়া লোকেদের একটি অংশ হয়তো বাস্তবে নিজেই সে কাজটি করছেন। কর্মব্যস্ত সময়ে গণপরিবহনে নারীদের ওঠা নিয়ে পরোক্ষে হয়তো এদেরই কেউ আপত্তি জানিয়ে রাখছেন, যা ওই হেলপারকে প্ররোচিত করছে নারী যাত্রী বাসে না তোলার ক্ষেত্রে। আর বাসের ভেতরে হেনস্তা কে করছে, আর করছে না, তা শনাক্ত করা অন্তত বর্তমান সময়ে বেশ কঠিন। কথা হলো এসব থেকে নিষ্কৃতি পেতে কি কোনো আইন নেই?
আছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইফফাত গিয়াস আরেফিন বলেন, ‘গণপরিবহনে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির খবর আমরা প্রায়ই শুনি এবং তা এক ধরনের অভস্ত্যতায় পরিণত হয়েছে৷ কখনো কখনো এসব ঘটনায় ব্যাপক প্রতিবাদ হয়৷ কেউ যদি গণপরিবহন যৌন নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে তাঁর অবশ্যই উচিত আইনের আশ্রয় নেওয়া। আমাদের দেশে প্রচলিত আইনে গণপরিবহনে বা বাসে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির শাস্তির বিধান রয়েছে।’
এই আইনজীবী জানান, দণ্ডবিধির ১৮৬০-এর ৫০৯ ধারায় ইভটিজিং সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই ধারা অনুযায়ী যদি কেউ অপরাধ করে এবং তা প্রমাণিত হয়, তবে সেই ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন। এবং এই আইনের ২৯৪ ধারা অনুযায়ী যদি কেউ এই অপরাধ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি তিন (৩) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই আইনের ৩৫৪ ধারা অনুযায়ী এই ধরনের অপরাধে ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে বা জরিমানা দণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৫ ও ৭৬ ধারায় শাস্তি হিসেবে ৩ মাস মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। একই অধ্যাদেশের ৭৬ ধারা অনুযায়ী শাস্তি ১ বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে অথবা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে।’
প্রয়োজন নিরাপত্তা:-
মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাজিফা জান্নাত। নিয়মিত গণপরিবহনে যাতায়াত করেন। সে সুবাদে তিনি প্রতিদিন দুঃসহ কিছু অভিজ্ঞতারও মুখোমুখি হন। নিজের অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে তিনি বলেন, ‘বাসে নারীদের জন্য চালকের পাশে পাঁচজনের বসার জায়গা নির্ধারিত থাকে। বাস চালকের পাশের সিটগুলো ঘেঁষে থাকে ইঞ্জিন। এতে সেখানে যারা বসেন, তাদের প্রচণ্ড গরম সহ্য করেই বসতে হয়৷ পাবলিক বাসগুলোতে নারীদের হেনস্তার ঘটনা অহরহ ঘটে। আমাকেও দুবার এক ধরনের জঘন্য অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ রকম ঘটনায় দেখা যায়, বাসের বাকি যাত্রীরা নিরব দর্শকের ভূমিকায় থাকেন৷ আরেকটি বিষয় হলো প্রায় প্রতিদিনই বাস চালকদের মুখে নারীকেন্দ্রিক গালি শুনি। নিরুপায় হয়ে এসব কিছু সহ্য করে আমার মতো আরও লাখ লাখ নারী মেট্রোপলিটন শহরের পাবলিক বাসগুলোতে আসা যাওয়া করছেন। আর মফস্বল শহরে পাবলিক বাসে চড়ার অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ। ইভটিজিং থেকে শুরু করে ভয়াবহ সব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান তাঁরা। এতে গণপরিবহনে নারীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন৷’
মূলে আছে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব:-
কর্মজীবি নারী তাহুরা থাকেন শ্যামলীতে। প্রতিদিন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে সাভারে যান। গণপরিবহনে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘পাবলিক বাসে ঠিকঠাক বসার জায়গা পাই না। প্রতিবন্ধী ও নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৯টি আসন লেখা থাকে। এ নিয়ে প্রায় দিন কথা শুনতে হয়। শিক্ষিত মানুষেরা এই বিষয়ে অশিক্ষিতের মতো কথা বলেন। কেউ কেউ বলেন, প্রতিবন্ধী আর নারী একই বিষয়। তাই তাদের জন্য একত্রে বসার জায়গা রাখা হয়েছে। আবার বাসে থাকা কিছু অর্ধশিক্ষিত পুরুষ গলা ফাটিয়ে বলেন, নারীরা এত সমান অধিকারের কথা বলেন, তাহলে বাসে উঠলে এত চিল্লা-চিল্লি করে কেন? নয় সিটের বাইরে পুরুষ সিটে বসতে চায় কেন? আমাগো মতো দাঁড়িয়ে যেতে পারে না?’
বলতে বাধা নেই, এ ধরনের আচরণ পুরুষতান্ত্রিক আচরণের চূড়ান্ত রূপ। পুরুষ সহযাত্রীদের কাছ থেকে এমন আচরণ পেয়ে ভুক্তভোগী নারীরা নিরূপায় বোধ করেন। মাঝেমধ্যে দু-একজন পুরুষ সহযাত্রী যে এসব আচরণের প্রতিবাদ করেন না, তা নয়। কিন্তু এর সংখ্যা অনেক কম। ফলে ভুক্তভোগী নারীরা কার কাছে কীভাবে সাহায্য চাইবেন, তা নিয়ে ধন্ধে থাকেন।
করণীয়:-
কথা হলো, গণপরিবহনে এই ধরনের ঘটনার পর কি নারীরা চুপচাপ থাকবেন? এই পরিস্থিতিতে নারীরা কয়েকটি মাধ্যমে তাদের কথা জানাতে পারেন, চাইতে পারেন সাহায্য।
জরুরি সেবা ৯৯৯
বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে জরুরি সেবা নম্বর আছে ৯৯৯। এই নম্বর এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিপদগ্রস্ত মানুষ সাড়াও পাচ্ছেন।।দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা এটি চালু থাকে। গণপরিবহনে যেকোনো নারী হেনস্তার শিকার হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তাদের অভিযোগের কথা জানাতে পারেন। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নারীরা যেকোনো মোবাইল থেকে এই নম্বরে ফোন করতে পারবেন।
জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টার ১০৯:-
গণপরিবহনে কোনো নারী বিপদের আশঙ্কা করলে জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টারের ১০৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টার ১০৯ কাজ করে। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা এটি চালু থাকে।
জয় অ্যাপস:-
যখন কোনো নারী গণপরিবহনে হেনস্তার আশঙ্কা করেন, তখন ‘জয় অ্যাপস’ ক্লিক করতে পারেন তিনি। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ন্যাশনাল হেল্প লাইন সেন্টারে (টোল ফ্রি হেল্পলাইন ১০৯) এই অ্যাপসে প্রদত্ত ৩টি এফএনএফ নম্বরে জিপিএস লোকেশনসহ ম্যাসেজ চলে যায়। পরবর্তীতে ১০৯ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হয়। তাই সবাই এই দরকারি অ্যাপটি নামিয়ে নিতে পারেন।
বাঁচাও অ্যাপস:-
গণপরিবহনে কোনো নারী বিপদের আশঙ্কা করলে তিনি ‘বাঁচাও’ অ্যাপের সহায়তা নিতে পারেন। এতে তিনি যেকোনো পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারেন। নারী যদি কখনো বিপদের আশঙ্কা করেন, তাহলে এই অ্যাপের ‘রেপ অ্যালার্ট’ লেখা বাটনে ক্লিক করলে কাছাকাছি থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই বার্তা পেয়ে যাবেন। এবং সেই নারীকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে পারবেন।
প্রয়োজন সহযোগিতা:-
গণপরিহনে নারীকে হেনস্তার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজন সহযোগিতার মনোভাব, গণপরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ ও নারীবান্ধব অবকাঠামো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘এখন নারীরা কাজের জন্য অনেক বেশি ঘর থেকে বের হচ্ছেন।
কিন্তু সেই অনুপাতে গণপরিবহন বাড়েনি। বলা হয়, নারীদের সমান সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু নারীরা কি সব জায়গায় সমান অধিকার পাচ্ছে? নারী-পুরুষ উভয়েই কিন্তু চাকরি করছে। দেখা যায় গণপরিবহনে পুরুষেরা যত সহজে যেতে পারেন, নারীরা সেভাবে পারেন না। নিয়মটা এমন হওয়া উচিত, যিনি বাসের জন্য আগে দাঁড়াবেন, তিনিই আগে উঠবেন। এই নিয়ম নারী-পুরুষ সবার সমানভাবে কার্যকর হবে।’
এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আইনের শাসন ও প্রয়োগ। তিনি বলেন, গণপরিবহনে নারীদের হেনস্তায় জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারীদের আইনের আশ্রয় নিতে হবে। অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ ধরনের অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা জরুরি। পরিবহন মালিক সমিতির উচিত বাসের হেলপারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তারা নারী যাত্রীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করবে। এ ছাড়া গণপরিবহনে সিসিটিভি রাখার ব্যবস্থা করা দরকার। জরুরি সেবার নম্বর বাসে বাসে লাগিয়ে রাখা দরকার। পাশাপাশি পরিবহনের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। গণপরিবহনে নারীদের সিটের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাসে থাকা পুরুষ যাত্রীদেরও চুপ করে বসে না থেকে ভুক্তভোগী নারীর পাশে দাঁড়াতে হবে। মোটকথা নারীবান্ধব চালক ও সহকারী নিশ্চিত করতে হবে।’
মনোবল বৃদ্ধি:-
গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি হওয়াটা এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনেক নারীই ভয় পেয়ে যান, ভেতর থেকে দমে যান। এ ক্ষেত্রে মনোবল ধরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা রহমান বলেন, ‘গণপরিবহনে নারীদের প্রতি হয়রানিমূলক আচরণ আসলেই খুব গর্হিত অপরাধ। কষ্টের বিষয় হলো, সে সময় প্রতিবাদ করতে গেলে ফলাফল বিপরীত হয়। আবার পরিবারকে বললে অনেক কথা শুনতে হয়। সে কারণে নারীরা এই ধরনের আচরণগুলো অনেক সময় মেনে নেন। তবে আমি বিশ্বাস করি দলগতভাবে অথবা নিজের অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করা ভালো। এই ধরনের ঘৃণ্য আচরণ যারা করে, তারা খুব ভীতু হয়। প্রতিবাদ না করলে এদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়। অনেক নারী এই ধরনের আচরণের ফলে বিষণ্নতায় ভোগেন। নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেন। এটা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে গণপরিবহনে পুরুষেরা যে অশালীন আচরণ করে, তার জন্য নিজেকে কখনও দোষারোপ করা, দায়ী করা বা নিজেকে তুচ্ছ মনে করা বা এমন কোনো রকমের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যাওয়া যাবে না। আজকের নারীরা স্বাধীন ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এই স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রেখে সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে দমে না গিয়ে মনোবল ধরে রাখতে হবে।