মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নিজস্ব সংবাদদাতা, লামা:
লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ‘কেয়াজুপাড়া বাজার হতে লোহাগাড়া’ পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কে ৫০ টাকা সিএনজি ভাড়ার পরিবর্তে ৭০ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। করোনা পরিস্থিতির পূর্বে ৫০ টাকা ভাড়া থাকলেও তা বেড়ে এখন ৭০ টাকা। ১৮ কিলোমিটার সড়কে ৭০ টাকা ভাড়া সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক অতিরিক্ত বলে জানান স্থানীয়রা।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণ পরিবহন চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। সে জন্য গাড়ি মালিকদের ক্ষতি পোষাতে ৬০ শতাংশ ভাড়াও বাড়ানো হয়। এরপরে উপজেলার অন্যান্য অভ্যন্তরীন ও বহি:সড়কে ন্যায় কেয়াজুপাড়া বাজার হতে লোহাগাড়া পর্যন্ত সড়কে ৫০ টাকার সিএনজি ভাড়া বাড়িয়ে ৭০ টাকা করা হয়। যদিও কখনো নূন্যতম স্বাস্থ্য বিধি মানা হয়নি।
বর্তমানে সারাদেশে গণপরিবহনে পূর্বের ভাড়া ফিরে আসলেও এই রোডে বাড়তি ভাড়া আদায় করে যাত্রী হয়রাণী করার অভিযোগ করেছেন এই সড়কে চলাচল করেন এমন কয়েকজন যাত্রী। কেয়াজুপাড়া বাজার এলাকার আনোয়ার হোসেন, মমতাজ মিয়া ও এনায়েত হোসেন বলেন, সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া বাজার হতে লোহাগাড়া পর্যন্ত সড়কে সিএনজিতে ৭০ টাকা ভাড়া নেয়া হয়। আগে ৫০ টাকা ভাড়া ছিল। প্রতিটি সিএনজিতে ড্রাইভার ছাড়া ৫ জন যাত্রী নেয়া হয়। পূর্বের ভাড়া দিতে চাইলে সিএনজি চালকরা যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। যারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা/প্রচলিত বিধি-বিধান অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা। একই চিত্র লামা উপজেলার অভ্যন্তরীন সকল সড়কে।
এবিষয়ে কথা হয়, কেয়াজুপাড়া লোহাগাড়া সিএনজি চালক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেমের সাথে। তিনি বলেন, কেয়াজুপাড়া হতে লোহাগাড়া পর্যন্ত আমরা ৬৫ টাকা ভাড়া নির্ধারন করেছি। কেউ ৭০ টাকা নিলে তা অবশ্যই বেশী নিচ্ছেন। প্রতি কিলোমিটারে যাত্রী প্রতি সরকারি নির্ধারিত ভাড়া কত এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমি জানিনা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২০১৬ সালের ৩ মে প্রজ্ঞাপনমূলে বিদ্যমান ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রী প্রতি কিলোমিটার সর্বোচ্চ ১.৪২ টাকা করা হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনে গাড়ি মালিকদের ক্ষতি পোষাতে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটার যথাক্রমে ১.৭০ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। সে হিসাবে ১৮ কিলোমিটার সড়কে ভাড়া নেয়ার কথা ২৫.৫৬ টাকা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে নেয়া হলে ভাড়া হবে ৩০.৬০ টাকা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে ৭০ টাকা। কেয়াজুপাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ সেলিম বলেন, আমাদের এলাকার মানুষ গরীব। তাই দ্রুত অতিরিক্ত ভাড়া কমানো দরকার।
সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম বলেন, অনেকবার বলার পরেও সিএনজি ড্রাইভাররা ভাড়া কমায়নি। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজা রশীদ বলেন, বিষয়টি জেনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।