১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় বান্দরবান জেলা এবং লামা উপজেলায় প্রথম এবং চট্টগ্রামে বিশেষ পারদর্শিতা পুরস্কার পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী কোয়ান্টারা।
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আয়োজিত কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক পর্যায়ে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের মেয়ে কোয়ান্টারা অংশ নেয়। কুচকাওয়াজে দলের কমান্ডার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তারের নেতৃত্বে বুদ্ধিদীপ্ত প্যারেড নৈপুণ্য মুগ্ধ করেছে স্টেডিয়াম ভর্তি সকল দর্শককে। এজন্যে তারা বিশেষ পারদর্শিতা পুরস্কারে ভূষিত হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান এনডিসি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করে স্কুলটির ছেলে শিক্ষার্থী কোয়ান্টারা। পাশাপাশি ‘চলো এগিয়ে যাব বাধা মানি না’ গানের সাথে তাল মিলিয়ে ডিসপ্লে প্রদর্শন করে স্কুলের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ১৬৮ জন শিক্ষার্থী। মনোমুগ্ধকর এই ডিসপ্লেতেও তারা পেয়েছে প্রথম স্থান।
অনুষ্ঠান শেষে পুরো স্টেডিয়াম চত্বর পরিস্কার করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীরা। গতকালও তারা মহড়া শেষে পরিচ্ছন্নতার এই কাজটি করেছে। এই দৃষ্টান্ত দেখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিরবীজি ও বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আখতার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সাধুবাদ জানান।
মহান বিজয় দিবসে লামা উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতাতেও সাফল্য পেয়েছে ছেলে কোয়ান্টারা। লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় গ্রুপে প্রথম হওয়ার পাশাপাশি ডিসপ্লেতেও তারা প্রথম হয়। এবারের ডিসপ্লেতে অংশ নেয় কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ১৭১ জন কোয়ান্টা। ‘নোঙ্গর তোলো তোলো সময় যে হলো হলো’ সংগীতের সাথে এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত ডিসপ্লে মুগ্ধ করে হাজারো দর্শককে। এছাড়া অনুষ্ঠান শেষে কোয়ান্টাদের একটি ব্যান্ড বাদন দল সংক্ষিপ্ত পারফর্মেন্স করে। এতে অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ হয়। তারাও বিশেষ পুরস্কার লাভ করে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল চৌধুরী, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোস্তফা জাবেদ কায়সার এবং উপজেলা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
২০০১ সালে মাত্র সাত জন মুরং শিশু নিয়ে যাত্রা শুরু করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। ২০ বছরের পরিক্রমায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এখন এখানে আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে এই স্কুলের রয়েছে শিক্ষা ও ক্রীড়ায় দেশসেরা সাফল্য। ঢাকায় জাতীয় শিশু-কিশোর কুচকাওয়াজে তারা প্রথম হয়েছে ২০১৫ থেকে টানা পাঁচ বছর। বুয়েট, মেডিকেল ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছে কোয়ান্টারা।