আনোয়ার হোসেন, পানছড়ি প্রতিনিধি::
পাহাড়ি এলাকায় শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাকে সুদৃঢ় করতে পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) ও লোগাং জোনের উদ্যোগে নলকূপ ও ঢেউটিন বিতরণ, আর্থিক অনুদান প্রদান এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্গম পাহাড়ি জনপদে বসবাসরত সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিজিবির মানবিক ভূমিকা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) ও লোগাং জোনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় এসব জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনের লক্ষ্যে পানছড়ি ব্যাটালিয়নের অধীন পূজগাং বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ চন্দ্র কার্বারী পাড়া এলাকায় ১০টি পরিবারের জন্য ১টি নলকূপ বিতরণ করা হয়। একইভাবে লোগাং বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ অংজ পাড়া এলাকায় ৮টি পরিবারের জন্য আরও ১টি নলকূপ স্থাপন করা হয়।
এছাড়া আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সহায়তায় দুস্থ উযেয়া বৌদ্ধ বিহারের জন্য ৭ বান্ডিল ঢেউটিন প্রদান করা হয়। এতে বিহারটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অপরদিকে লোগাং বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন লোগাং বাজার মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) ও লোগাং জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, পিএসসি (সেবা)। এ সময় তিনি বলেন, পাহাড়ি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা বিজিবির অন্যতম দায়িত্ব। পাশাপাশি পাহাড়ে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিজিবি নিয়মিতভাবে জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা ও সম্প্রীতির মাধ্যমেই একটি স্থিতিশীল ও উন্নত পাহাড়ি অঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব।
এদিন পানছড়ি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সভাপতিত্বে পূজগাং বিজিবি ক্যাম্প ও লোগাং বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার স্থানীয় হেডম্যান, কারবারি ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সীমান্ত নিরাপত্তা, সামাজিক সম্প্রীতি এবং উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, পাহাড়ি এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বিজিবির ভূমিকা প্রশংসনীয়। তারা এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
স্থানীয়রা বিজিবির এমন মানবিক উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।