স্টাফ রিপোর্টার:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সদর উপজেলার টেকনিক্যাল স্কুলের শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা, পরিবহণ শ্রমিক মামুন সহ পাহাড়ে সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্য বিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার ৫ অক্টোবর সকাল দশ ঘটিকায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচী পালিত হয়। বৈষম্য বিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক তৌহিদ আজাদের সভাপতিত্বে উক্ত প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সাবেক সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উচ্চা ক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ কমিশন গঠনের কোন বিকল্প নাই। ভূমি সমস্যা সামাধান সবাইকে সাথে নিয়ে করতে হবে। ব্যাংক লোন নিলে উপজাতিদের কোনো সুদ দিতে হয় না, কিন্তু বাঙালিদের চড়া সুদ দিতে হয়। উপজাতিরা ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারলে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই তা মওকুফ করা হয়। কিন্তু বাঙালিরা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয় এবং জেলখানায় যেতে হয়। লোনের ক্ষেত্রে সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য একই নীতি অবলম্বন করেছে। এই সকল বৈষম্য দূরীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক এডভোকেট ইব্রাহিম মুজাহিদের সঞ্চালনায় উক্ত প্রোগ্রামে আরও বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক , শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাদেকুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবির বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, এডভোকেট হাসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফজলুল হক শ্রাবণ, তারেক মানোয়ার প্রমুখ।
বক্তারা ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলসহ বৈষম্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন ও পার্বত্য চুক্তি বাতিল করে দেশের সাংবিধানিক ধারাসমূহ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ।
বক্তারা আরো বলেন, ‘নানান বৈষম্যের শিকার হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি পরিবারগুলো। উপজাতি পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, ঠিক তার বিপরীতে বাঙালি পরিবারগুলো তা পাচ্ছে না। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান অধ্যুষিত রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে।
রাজনৈতিকভাবে তিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। সকল জায়গায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে।
চলমান বৈষম্য দূর করণের দাবী জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ‘উপজাতিদের জন্য আয়কর ফ্রি, কিন্তু বাঙালিদের আয়কর দিতে হয়। তাই অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা গরিব থেকে গরিব হচ্ছে আর উপজাতিরা দিন দিন ধনী থেকে ধনী হচ্ছে। আয়কর প্রদানে পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের জন্য একই নিয়ম চালু করতে হবে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচীতে পার্বত্য এলাকার জনসাধারণ অংশ গ্রহণ করে।