ফুটফুটে শিশু আব্রার হোসেন আহনাফ (৭)
স্থানীয় মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করতো। গত ৪-৫ দিন আগে তার শরীরে ডেঙ্গু পজেটিভ হওয়ায় চান্দিঘাটের শিশু হাসপাতলে ভর্তি করা হয় তাকে। চারদিন হাসপাতালে থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে খাজে দেওয়ান প্রথম লেনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বৃহস্পতিবার হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। একমাত্র ছেলের অসুস্থতায় মা রুপা দিশেহারা হয়ে বিকেলের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে শিশুকে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষার নিরীক্ষা শেষে বিকেলের দিকে শিশু আহনাফকে মৃত ঘোষণা করেন।
কিন্তু শিশু আহনাফের মাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছিল না যে, তার সন্তান আর এ পৃথিবীতে নেই। তিনি বারবার আর্তনাদ করে বলছিলেন কিছুক্ষণ আগেই তো ও আমার সঙ্গে কথা বলল ,এখন কথা বলে না কেন ? ডাক্তার ওকে একটু কথা বলায়ে দেন। আমার আহনাফ এভাবে আমাকে ছেড়ে যেতে পারে না। তার কান্না জড়িত প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না ডাক্তার সহ উপস্থিত সকলের কাছে।
এরপর আজ দুপুরের দিকে সরজমিনে এই প্রতিবেদক যান আহনাফদের বাসায়। সেখানে গিয়ে দেখা মিলল এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের।আহনাফের পোষা তিনটি লাভ বার্ড কিচিরমিচির বন্ধ করে নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। যেন মনিব হারানোর বেদনায় তারাও শোকাহত।তার স্কুলে যাওয়ার ব্যগটি পড়ে আছে ঘরে। নেই শুধু শিশু আহনাফ। শিশু আহনাফের মা এবং দাদি এ ঘর থেকে সে ঘরে হাঁটাহাঁটি করছিলেন আর কেঁদে কেঁদে বলছিলেন, আহনাফরে তুই কোথায় গেলি? তুই কেন গেলি ? ফিরে আয় -বাবা ফিরে আয়। মা বাবার একমাত্র সন্তান ছিল শিশু আহনাফ। সন্তান হারানোর বেদনায় পুরো পরিবারটি যেন নিথর নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। পুরো বাড়িটি যে শিশু মাতিয়ে রাখতেন। সেটি যেন আজ নির্জন স্তব্ধ বসত ঘর।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস