গত ১০ সেপ্টেম্বর মাগুরায় ডা: অপূর্বর নজিরবিহীন অপচিকিৎসা কাণ্ড ঘটে গেল স্থানীয় এহসান ক্লিনিকে। উক্ত ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে এসেছিলেন শিলা (২৭) নামের এক গৃহবধু, সে মাগুরা সদরের বেলনগর গ্রামের লাভলু মোল্লার ছেলে নয়ন মোল্লার স্ত্রী।নয়ন মোল্লার স্ত্রী শিলা বেগম আনুমানিক দুপুর ১.৩০ সময় সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য মাগুরা এহসান ক্লিনিকে ভর্তি হয় । শিলা বেগমের অপারেশন করার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে অটোচালক নয়ন মোল্লার সাথে ১২০০০ টাকায় চুক্তি করেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অপারেশন করানোর জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ অপূর্ব কুমার বিশ্বাসকে ঠিক করেন। ডাক্তার অপূর্ব কুমার বিশ্বাস সিজার সম্পন্ন করেন এবং শিলা বেগম একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন । ঠিক ওই সময় ডাক্তার অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিলা বেগমের স্বামী মোঃ নয়ন মোল্লাকে জানান তার স্ত্রীর পাকস্থলীতে এপান্ডাডিস রয়েছে। এখন যদি এপেন্ডিসাইট অপারেশন করতে চান তাহলে স্বল্প খরচে করা সম্ভব হবে।ভবিষ্যতে করতে গেলে অনেক টাকা পয়সা ব্যয় হবে এবং রোগীর জন্য এটা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এইভাবে ভীতিকর তথ্য দিতে থাকেন। এখন আপনারা কি করবেন?আমরা অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি হলে আমার স্ত্রী শিলা বেগমকে পুনরায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় এবং এপেন্ডিসাইড অপারেশন এর নামে পুনরায় ভূল অস্ত্রোপচার করলে আমার স্ত্রীর প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এভাবে রক্তক্ষরণ হয়ে আমার স্ত্রী অপারেশন থিয়েটারের মধ্যেই মারা যায়। মৃত অবস্থায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শুধু কালক্ষেপণ করিতে থাকে। মৃত অবস্থায় রাত দশটা পর্যন্ত অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে রেখে নানা ধরনের নাটক করতে থাকে। এক পর্যায় মৃত্যু রোগীকে আইসিইউতে পাঠাতে হবে বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। পরে রোগীর আত্মীয় স্বজনের সন্দেহ হলে ডাক্তারকে ক্লিনিকের মধ্যে আটক করে। ডাক্তার বিভিন্ন তালবাহানা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও জনতার রোষানলে পড়ে। পরে মাগুরা সদর থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার গভীরে যেয়ে জানা যায় বেলনগর গ্রামের জনৈক কমিশনারের অর্থাৎ তথাকথিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়।
এখানে স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন আসছে এভাবে আর কত মৃত্যু ধামাচাপা দেয়া হবে? আর কতজন বাচ্চা মা হারা হলে এই অপূর্বর মতো ডাক্তারদের অপচিকিৎসা বন্ধ হবে? আর কত কোটি টাকা অর্জন করলে এই অপূর্বর মত ডাক্তারদের রোগীদের রক্তচোষা বন্দ হবে?
আরো জানা যায় সম্প্রতিকালে এই ডা: অপূর্ব কুমার বিশ্বাস মাগুরা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। যিনি নিজেই একজন অপচিকিৎসক এবং চিকিৎসার নামে রীতিমতো রোগীদের সাথে প্রতারণা করছেন, তার কাছ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা কি শিখবে? মানবিক মূল্যবোধহীন এইসব শিক্ষক আরেকজন মূল্যবোধেহীন শিক্ষার্থীর জন্মদিন এটাই তো স্বাভাবিক। এই অপূর্বদের কাছেই কি আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা চিরকাল জিম্মি হয়ে থাকবে?
এদিকে সাধারন মানুষ মনে করে ডা: অপূর্ব শুধু একটা রোগীকে মেরেই ফেলেননি বরং তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজের দোষ ঢাকার অপকৌশল অবলম্বন করেছেন যা নজিরবিহীন, কোন বিবেকবান মানুষের পক্ষে এহেন করা অসম্ভব। এজন্য তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।