সবশেষ কার সঙ্গে কবে দেখা হয়েছে, অনেকেই তা মনে করতে পারলেন না। অনেকেই কৈশেঅরের বন্ধুদের চেহারাটাও ভুলে গেছে। সকলের চেহারায় বয়সের চাপ পড়েছে, জীবন-জীবিকা আর সংসারের ভার পড়েছে। সময় পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে ত্রিশ বছর আগের সেই দুরন্তপনায় ছুটে চলা মানুষগুলো।
‘আস্থা থাকুক বন্ধুতায়’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে গেল মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সবুজে ঘেরা পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়িতে ত্রিশ বছর পর ফেলে আসা কৈশোরের সব বন্ধুরা মেতে উঠেছিলে প্রাণের স্পন্ধনে বন্ধুত্বের মেলবন্ধনে। শত প্রাণের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠেছিল উৎসব প্রাঙ্গণ খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ‘হিল ফ্লেভারস রিসোর্ট ও কমিউনিটি সেন্টার’।
মো. জহিরুল ইসলামের প্রানবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিচিতি পর্ব আর ফুল দিয়ে একে অপরকে বরণ করে নেয়ার পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান ভুইয়া। এরপর একে একে অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন যমুনা টিভির সিইও ফাহিম আহমেদ, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম, মো. খোরশেদ আলম, প্রকৌশলী মো. মোকছেদ আলম, সমাজকর্মী ও উদ্যোক্তা শাপলা দেবী ত্রিপুরা, শিক্ষক দিনা আফরোজ ও আয়োজক কমিটির আহবায়ক মো. আব্দুল মালেক প্রমুখ।
যমুনা টিভির সিইও ফাহিম আহমেদ এসএসসি-৯২ ব্যাচকে একটি প্লাটফর্ম উল্লেখ করে বলেন, এটি আমাদের পরিবার। এ পরিবারকে আরো সংগঠিত করতে হবে। সকলের মধ্যে ঐক্যের বন্ধুন সুদৃঢ় করতে হবে। যেকোন প্রয়োজনে বন্ধুর পাশে দাড়াতে হবে। নির্মলেন্দু গুণের কবিতার ‘হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই, দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন আমাদের এ বন্ধন অটুট থাকুক।
ভবিষ্যতে আরো ব্যাপকভাবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে থাকা এসএসসি-৯২ ব্যাচের সকল সকল বন্ধুদের অংশগ্রহণে পুনর্মিলনী আয়োজনের ঘোষনা দেন বিরানব্বইয়ান খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম।
ঈদ পুনর্মিলনী ও ত্রিশ বছর পুর্তি উপসবকে সামনে রেখে উৎসব প্রাঙ্গণে ছিল বন্ধুদের ছিলো বাঁধভাঙ্গা জোয়ার। কেউ কেউ স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে যোগ দিয়েছেন উৎসবে। দীর্ঘদিন পর একে অপরকে কাছে পেয়ে সেলফি তোলা, গল্পগুজব, স্কুলজীবনের স্মৃতি আওড়ানো, সংসার জীবনের বর্তমান জীবনের বাস্তবতা সব মিলিয়ে এক প্রানবন্ত আড্ডা ছিলো পুরো রিসোর্ট জুড়ে। দিনভর চা-কাপ ছাড়াও মধ্যাহ্ন ভোজে বাহারী ভুফে খাবারে আয়োজন ছিল ব্যাতিক্রমী।
উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে ছিল বন্ধুদের পরিবেশনায় মনমাতানো সঙ্গীত আয়োজন। বন্ধুদের পরিবেশনা মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেছে অংশগ্রহণকারী বন্ধুরা। এর আগে নারী বন্ধুদের মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগীতা ও ছেলে বন্ধুদরে মধ্যে বাস্কেটবল নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা এবং র্যাফের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সবশেষে অংশগ্রহণকারী বন্ধুদের মাঝে যমুনা টিভির সিইও ফাহিম আহমেদ এর সৌজন্যে উপহার সামগ্রী তুলে দেন যমুনা টিভির সিইও ফাহিম আহমেদ, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম এবং সমাজকর্মী ও উদ্যোক্তা শাপলা দেবী ত্রিপুরা।
এম/এস