গোয়ালন্দে মুজিববর্ষের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ‘ক’ শ্রেনীর ঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন এক দিনমজুর পরিবারের নামে বরাদ্দকরা ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক পরিবার। এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন। গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকার নিভৃত কৃষ্ণপট্টি গ্রামে এ ঘনাটি ঘটেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত আকরাম শেখ বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর আগের আমার বাবা ছাত্তার শেখ অনেক কষ্ট করে কৃষ্ণপট্টি এলাকায় ৭ শতাংশ জায়গা কিনে রেখে গেছেন। কিন্তু সামর্থ না থাকায় আমার পৈত্রিক ওই জায়গায় আমি ঘর তুলতে পারিনি। মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছি। এ অবস্থায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন থেকে আমার নামে সরকারি পাকা ঘর বরাদ্দ দেয়। পরে কৃষ্ণপট্টি গ্রামে আমাদের নিজস্ব ওই জায়গায় সরকার থেকে পাওয়া রান্নাঘর, লেট্রিনসহ নতুন পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা অনেকেই জানিয়েছেন, ডিজাইন অনুযায়ী ঘরটির নির্মাণকাজ চলাকালে গত মঙ্গলবার (৭ জুন) সন্ধ্যার দিকে পাশের চর আন্ধারমানিক গ্রামের সেকেন মোল্লার ছেলে নজির হোসেন মোল্লা, নজিরের আপন বড় ভাই ফজল মোল্লা, বোন রাশেদা খাতুন, বোনজামাই মিলন মন্ডলসহ তাদের পরিবারের লোকজন এসে ঘরটি ভেঙে ফেলেন। খবর পেয়ে ওই রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় ছোটভাকলা ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আকরামের বাবার নামের জমির দলিল রয়েছে। ওই জমি মিউটিশন করা হয়েছে। সেখান থেকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের নামে দুই শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার পর আকরামের মুজিববর্ষের পাকা ঘরের কাজ শুরু হয়। নজির মোল্লা ও তাঁর পরিবারের লোকজন মিলে ওই ঘর ভেঙে ফেলে তাঁরা অপরাধ করেছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ঘর নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আজিজুল হক খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘরটি ভাঙচুরের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত নজির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘এটা মুজিববর্ষের ঘর আমার বড় ভাই বা বোন কেউ বুঝতে পারেনি। ওই ঘর ভাঙচুরের সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এছাড়া যে জমিতে ঘর তৈরী হচ্ছিল সেটা আমাদের নিজস্ব পৈত্রিক সম্পত্তি। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে।’
এম/এস