খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের সংরক্ষিত স্থান থেকে অর্ধ-শতবর্ষী গাছ রাতের আধারে কেটে পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারীভাবে কোন নিয়ম অনুসরণ না করেই রাতের আধারে অর্ধ- শতবর্ষীয় দুইটি শীল কড়ই গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে অফিসিয়ালভাবে লিখিত এবং বন বিভাগের কোনো অনুমতি ছিলনা বলে জানা গেছে। গাছ কাটার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর চলছে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানি উন্নয়ন বোর্ড এর পাশে বসবাসরত কয়েকজন জানান, কিছুদিন আগে অফিসে কর্মরত নাইট গার্ড নাছির বাহির থেকে লোকজন নিয়ে এসে কড়ই গাছগুলো কেটে নিয়ে যায়। গাছগুলি রামগড় ওয়াপদা অফিস সংলগ্ন স-মিলে নিয়ে চিড়ানোর পর দরজা জানালার চৌকাঠ করে নাছিরের বাড়ীতে নিয়ে যায়। গাছগুলি অনেক পুরনো, কোন নিয়ম মেনে কাটা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
স-মিল স্টাফ সূত্রে জানা গেছে ওই গাছগুলোর অনেক সরশ এবং অনেক পুরনো গাছ প্রতিটির মূল্য হবে ৩০থেকে ৪৫ হাজার টাকা।এই গাছগুলো কেটে নাছির তার বাড়ি নিয়ে গেছেন।
অফিস স্টাফ মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্যার গাছ কাটতে বলছে তাই গাছ কাটা হয়েছে, কাটা গাছ গুলো বর্তমানে কোথায় আছে এবিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে স্টাফ নাছির উদ্দিন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গলেও কর্মকর্তা দীবাংশু চাকমা (১৭মে, মঙ্গলবার) মুঠোফোনে জানান তিনি অফিসের গাছ কাটার বিষয়ে কিছু জানেননা, কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া একজন গার্ড সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি অফিসের সরকারি সম্পত্তি গাছ রাতের আধারে কেটে নিয়ে যায় কি করে, এমন প্রশ্নে দীবাংশু চাকমা বলেন আমি অফিশিয়াল কাজে বেশি ভাগই বাহিরে থাকি, অফিসের গাছ কাটার বিষয়ে আমি অবগত নই, নাছির কেন গাছ কাটছে তা ওনি জানেন, আমি জানিনা।
মূল্যবান গাছ দুটি কাটার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা রাতারাতি পুরনো কিছু গাছের ডালপালা বাহির থেকে এনে অফিসের সম্মূখে স্তুপ করে রেখে নাম সর্বস্ব কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে তাদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করায়। সংবাদে ঐখানে অবস্থানকারী একজন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধির বক্তব্য তুলে ধরলেও পরে জানা যায় গোয়েন্দা প্রতিনিধি গাছ কাটার লিখিত অনুমতির বিষয়ে অবগত নয়। সংবাদে পাউবো এর পাশ^বর্তী একজন স্থানীয় ব্যক্তির লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে গাছগুলি কাটা হয়েছে বলা হলেও ঐ ব্যক্তি জানান, ঝুকির বিষয়টি জানিয়ে আবেদন করা হলেও শুধুমাত্র দুইটি গাছ কাটা হয়েছে ঝুকিতে থাকা অন্য গাছগুলি কাটা হয়নি।
রামগড় উপজেলা বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুলতানুল আজিম বলেন, বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি গাছ কাটা যায় না। কিন্তু পানি উন্নয়ন বিভাগ থেকে সেই নিয়ম মানা হয়নি। আমরা এই বিষয়ে অবগত নই।
এম/এস