মোঃ হাচান আল মামুন দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে রাঙামাটির সাজেকসহ লংগদু এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা ও বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে ব্যবহৃত বেইলি ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিকল্প রাস্তা না থাকায় পাঁচ টনের বেশি মালামাল নিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তোয়াক্কা করছেন না চালকেরা। দুর্ঘটনা ও ভোগান্তি এড়াতে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আপন চক্রবর্তী।
দীঘিনালা-লংগদু সড়কের চৌমুহনী এলাকায় সম্প্রতি অতিরিক্ত কাঠবোঝাই করে ট্রাক চলাচলের কারণে খুলে পড়ে বেইলি ব্রিজের পাটাতন। এতে রাঙামাটির লংগদুর উপজেলার সঙ্গে খাগড়াছড়িসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়। প্রায় দুই দিন সড়কে ভারী পণ্য ও যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ ছিল।
তাছাড়া ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই ব্রিজটি ভেঙ্গে দুইটি ট্রাকসহ একটি যাত্রীবাহী মাহিন্দ্র দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং খাগড়াছড়ি সাজেক পর্যটন সড়কের মাইনী নদীর উপরের বেইলি ব্রিজ ২০২৩ সালের মার্চে এবং ২০১৭ সালে মাল বোঝাই ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে মাইনী নদীতে পড়ে যায়, এতে কতৃপক্ষ অতিরিক্ত মালবোঝাইকে দায়ী করে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বিটু চন্দ্র নাথ জানান, ১৯৯০ সালে নির্মিত সেতুটি গুলোর ঝুঁকি এড়াতে পাঁচ টনের বেশি ভারী যান চলাচল নিষেধ থাকলেও মানা হচ্ছে না। এতে সেতুর ক্ষতির পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির প্রায় সময় নাট বল্টু খোলা থাকে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালা-লংগদু সড়ক, দীঘিনালা-সাজেক সড়কে যে কয়েকটি বেইলি ব্রিজ রয়েছে তার সব কয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দ্রুত পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ভূক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি ট্রাক মিনি ট্রাক মালিক গ্রুপের লাইনম্যান সম্পাদক কৃষ্ণ কুমার দে বলেন, বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু রয়েছে। প্রায় সময় ভেঙে যায়। এসব ব্রিজের পরিবর্তে পাকা সেতু হলে চলাচল সুবিধাজনক হবে এবং যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি কমবে।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ কৌরাইশিন বলছেন, দীঘিনালাতে কয়েকটি বেইলি ব্রিজের মধ্যে আমাদের আওতায় জামতলী, বেতছড়ি, বড় মেরুং, ছোট মেরুং ও চংড়াছড়িসহ মোট ৬টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে , তার মধ্যে জামতলী ও বেতছড়ি বেইলি ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় বিকল্প বেইলি ব্রিজ গুলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দেখাশোনা করছেন। বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য প্রতিবছরই প্রকল্প দেওয়া হয়। এরমধ্যে একটি ব্রিজের দরপত্র শেষ হয়েছে। একটির কাজ দু-এক দিনের মধ্যে শুরু হবে এবং ধারাবাহিকভাবে সবগুলো বেইলি ব্রিজ পাকা হবে।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এবং সাজেক সড়কে ছোট-বড় ৮টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। সবগুলোই বর্তমানে ঝুঁকির্পূণ হয়ে পড়েছে।