আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার “রাণী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়” সাড়ে ৯লাখ টাকার সংস্কার কাজ শেষে হস্তান্তরপত্রে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর না করায় শিক্ষকের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন ঠিকাদার! ঠিকাদারের দাবী সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুবিধা না পেয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের কানভারী করে ঝামেলা পাকাচ্ছেন!
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর খাগড়াছড়ি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাণী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন সংস্কারে সাড়ে ৯লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে জেলার মেসার্স আম্বিয়া ট্রেটার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আফসার উদ্দিন উক্ত সংস্কার কাজ প্রাপ্ত হয়ে যথারীতি কাজ শুরু করেন। কাজ শুরুকালীন বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন মো. নাঈমুল হক। গত জুনে সংস্কারের ৯০% কাজ শেষ হলেও অতিবৃষ্টির কারণে রংয়ের কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নতুন শিক্ষক দায়িত্ব গ্রহন করেন। এরই মধ্যে ঠিকাদার রং,চুনের কাজ শেষ করে বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
৮ অক্টোবর কাজ শেষ হয়েছে মর্মে হস্তান্তরপত্রে দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিতে আসেন ঠিকাদার মো. আফসার উদ্দিন।
এ সময় দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক কাজের শিডিউল দেখতে চায়। এ নিয়ে শুরু হয় উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা! কাজ শুরুকালীন সময়ের দায়িত্বরত শিক্ষক মো. নাঈমুল হকের নিকট শিডিউল দিয়ে পূঙ্খানুপুঙ্খ কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানালে প্রধান শিক্ষক তা অবহিত নয় বলে জানান।
এ সময় মো. নাঈমুল হক উপস্থিত হয়ে ঠিকাদারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে উভয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে! পরে ঠিকাদার হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর না নিয়ে বেরিয়ে যান।
এ সময় সংস্কার কাজে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, কাজ আরম্ভের সময়ে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মো. নাঈমুল হক ঠিকাদারের কাছে ২% সন্মানী দাবী করেন এবং ৫০হাজার টাকাও গ্রহন করেন! পরে নতুন শিক্ষক আসায় নাঈমুল হক অবশিষ্ট টাকা সরাসরি দাবী করতে না পেরে কৌশলে ঠিকাদারকে চাপ প্রয়োগ করে তাঁর দাবীকৃত অবশিষ্ট টাকা আদায় করতেই এখন প্রধান শিক্ষককে কাজ সম্পর্ক সঠিক তথ্য না দিয়ে উল্টো ঠিকাদারকে হেনস্তা করছেন! যদিও ঠিকাদার এ প্রসঙ্গে সরাসরি অভিযোগ না করে বলেন, পিছনের কথা না বলে আমি যেহেতু কাজে ত্রুটি রাখিনি তাই সমাপ্ত করা কাজ বুঝিয়ে দিয়ে হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর নিতে চাইছিলাম! তবে আমি কাজের শুরুতে শিক্ষক কর্তৃক আশানুরূপ সহযোগিতা না পেয়ে বরং কাজে লোকসান গুনতে হয়েছে!
শিক্ষক মো. নাঈমুল হক ঠিকাদারের সাথে অনৈতিক কোন কাজ হয়নি! বরং শতভাগ কাজ আদায়ে অনড় থাকায় মিথ্যে অভিযোগ তোলার চেষ্টা করছেন।
দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আতাউল্লাহ জানান, কাজ শুরুকালীন আমি এখানে আসিনি। এখন কাজ শেষ হওয়ার কথা শুনে কাজের মান ও স্থান দেখে মনে হলো ঠিকাদার কাজে গাফিলতি করেছেন। তাই শিডিউল মোতাবেক কাজ বুঝে নিয়ে হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষরের বিষয়টি শেষ করতে চাওয়ায় ঠিকাদার আমাকে ও আমার শিক্ষককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়! যা অসৌজন্যমূলক!
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও প্রথমে ওয়েটিং দেখালেও পরক্ষণে তিনি ফোন বন্ধ করে দেন! বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়া জানান, বিষয়টি আমাকে শিক্ষক অবহিত করেছেন মাত্র, আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।