মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান ব্যুরো প্রধানঃ
বান্দরবানের লামায় ‘কম্পনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ পাশ ঘেঁষে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত একমাস ধরে পাহাড় কাটা হলেও এ যেন দেখার কেউ নাই। অন্তত ২৫ ফুট উচু করে মাটি কাটায়, ঝুঁকিতে পড়েছে স্কুল ভবনটি। যে কোন পাহাড় ধসে স্কুলের উপর পড়ে, ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
পাহাড় কাটার বিষয়ে জায়গার মালিক মোঃ রফিক ও জসিম উদ্দিন বলেন, স্কুলের নতুন ভবনের বরাদ্দ এলে কর্তৃপক্ষ জোর করে আমাদের নামীয় জায়গায় স্কুল করে ফেলে। তারপরেও শিক্ষা প্রসারের স্বার্থে আমরা স্কুলকে ৪০ শতক জায়গা দিতে রাজি হই। ইতিমধ্যে স্কুল ভবন নির্মাণ শেষ হয়ে বিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সম্প্রতি সময়ে লামা-সুয়ালক সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। সেই রাস্তার কাজের জন্য প্রচুর বালু মাটি দরকার। পাহাড়টি বালু মাটির।
রাস্তার মাটি দিতে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ নাছির উদ্দিন ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ ইয়াছিন মাষ্টার সহ আরো কিছু লোকজনের যোগসাজসে টাকার জন্য রাস্তার ঠিকাদারকে স্কুল সংলগ্ন আমাদের পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে দেয়। স্কুলের পশ্চিম পাশের পাহাড় থেকে কমপক্ষে ৫শত গাড়ি মাটি কেটে নিয়ে গেছে। ২৫ থেকে ৩০ ফুট উচুঁ করে কাটা হয়েছে পাহাড়টি। যে কোন সময় পাহাড়টি ধসে স্কুলের উপর পড়তে পারে। এছাড়া এই জায়গা থেকে আমাদের লাগানো কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে। এইসব নিয়ে কথা বলায় নাছির মেম্বার আমাদের নানাভাবে হয়রাণী করতে চাচ্ছে। আমরা এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় ২/৩টি সিন্ডিকেট কয়েক দফায় স্কুল সংলগ্ন পাহাড়টি কেটে মাটি নিয়ে গেছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছেনা। মূলত স্কুলকে পুঁজি করে কিছু লোক পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে।
কম্পনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ওয়াজ কুরুনি বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা। কারা কাটছে সেটাও জানিনা।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন, স্কুলের ওয়াসবøক করার প্রয়োজনে কিছু জায়গা দরকার তাই মাটি কাটছি। রাস্তার কাজে প্রয়োজন হওয়ায় মাটিগুলো সড়কে দেয়া হচ্ছে। এই জায়গা খাস। এজায়গা অভিযোগকারীর জায়গা না।
এবিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর এর সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তথ্য পেয়েছি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাহাড় খেকোদের ছাড় দেয়া হবেনা।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে আমাদের কাছে আসতে বলেন। আমরা বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নিব। পাহাড়টি কাটা বন্ধ করতে সরই ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে।