মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবান
বান্দরবানের আলীকদমে উপজেলা পরিষদ ও আলীকদম সেনাজোন (৩১ বীর) এর যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়, পরে আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার পূনরায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে শেষ হয়, পরে দিবসটি উপলক্ষে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিটিতে আলীকদম উপজেলায় বসবাসরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় ও বাঙালিরা নিজেদের ঐতিহ্যগত বর্ণিল পোশাক, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার লোকজন এই র্যালিতে অংশ নেয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আলীকদম উপজেলা পরিষদ ও আলীকদম সেনাজোন (৩১ বীর) এর উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার পাশাপাশি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।
আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আলীকদম সেনাজোন (৩১ বীর) জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মোঃ শওকাতুল মোনায়েম পিএসসি।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মোঃ সোয়াইব, আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক অংশেথোয়াই মার্মা, লামা পৌরঃ মেয়র জহিরুল ইসলাম, লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামান, উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মান্নান, আলীকদম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন, জয়নাল আবেদীন, কফিল উদ্দিন, ক্রাত পুং ম্রোসহ সাংবাদিক, স্হানীয় হেডম্যান, কারবারী ও জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
আলীকদম সেনাজোন (৩১ বীর) জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মোঃ শওকাতুল মোনায়েম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পরবর্তী সময়ে জেলায় স্কুল,কলেজ, হাসপাতাল, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সর্বক্ষেত্রে অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে।
অত্র এলাকার শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি এই অঞ্চলে সুবিধা আরও সম্প্রসারিত করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে পর্যটন স্পট রয়েছে। সেগুলো সঠিক ভাবে বিকাশ করতে পারলে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা উপার্জন করা সম্ভব। এতে করে রাষ্ট্র যেমন অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে তেমনি পর্যটন বিকাশের ফলে স্থানীয় পাহাড়ী জনসাধারণের একটি বিরাট অংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হলে চাঁদাবাজি/সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অনেকাংশে কমে যাবে বলে সহজেই অনুমেয়।
সেনাবাহিনী জনগণের বন্ধু, তাই সেনাবাহিনীকে আপনাদের প্রতিপক্ষ না ভেবে সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। মনে রাখবেন বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের গণতান্ত্রিক দেশ। তাই এই দেশে বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের কোন জায়গা হবে না। আমি আশা রাখি এবং বিশ্বাস করি আলীকদম এবং লামা এলাকাবাসী কোন সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয় দেবে না। এজন্য সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
এছাড়াও তিনি আরোও বলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল স্তরের জনগণের আপদকালীন সময় ছাড়াও ধর্মীয় বিভিন্ন কর্মকান্ডে সবসময় সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে আসছে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকার সাধারণ জনগণের মাঝে পাশে থেকে যে কোন প্রয়োজনে সর্বদা নিরলসভাবে কাজ করে যাবে বলে জোন কমান্ডার আলীকদম জোন উল্লেখ করেন।