মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবান
বান্দরবানের লামায় কাঠ ব্যবসায়ী কর্তৃক আনন্দ টিভির বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি মো: ইসমাইল হোসেন ও চট্টবাণীর বিশেষ প্রতিনিধি মো: আরিফুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৩টায় লামা উপজেলার আজিজনগর-গজালিয়া সড়কের আজিজনগর কারিতাস মোড়ের ডাক্তার শফির দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
খবরপেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়া পদুয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন আজিজনগর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি নাছির উদ্দীন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বুধবার দুপুরে আহত সাংবাদিকরা স্ব শরীরে লামা থানায় উপস্থিত হয়ে হামলাকারী ৮ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলার বাদী মো. ইসমাইল হোসেন লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হিমছড়ি পাড়ার মৃত আমির হোসেনের ছেলে।
থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর ২০২৩ইং রাত ৮টার সময়ে আজিজনগর গাছ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মো. নুরুল ইসলাম সাংবাদিক মোহাম্মদ ইসমাইলকে ফোন করে গাছ ব্যবসায় সমিতির সাথে মিটিং এ বসার আমন্ত্রণ জানায় এবং লোভনীয় অফার দেয়। তিনি তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মিটিং এ না বসার কথা ছাফ জানিয়ে দেন। ওদিন আনুমানিক রাত ১১টার দিকে তিনি খবর পায়, অবৈধভাবে ১২টি কাঠ বোঝায় গাড়ি আজিজনগর ডলুছড়ি বন রেঞ্জ সংলগ্ন সড়কে একপাশে অবস্থান করছে গভীর রাতে পাচারের উদ্দেশ্যে।
ঐসময়ে আমরা অবৈধভাবে কাঠ পাচারের বিষয়টি লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও আজিজনগর ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে তথ্য দিলে তাহারা আমাদের বলে যে, আমরা তৎপড় আছি এবং আপনাদেরও সহযোগিতা চাই। তাই আমি ও আমার সহযোগী সাপ্তাহিক চট্টবানী পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম সহ রাত অনুমান ৩ ঘটিকায় গজালিয়া সড়ক কারিতাস মোড় ডাক্তার শফির দোকানের সামনে অবৈধ কাঠ পাচারের ফুটেজ সংগ্রহ করার জন্য অপেক্ষা করি।
এসময় একটি জীপ গাড়ি দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়। এর পরপর তিনটি মোটর সাইকেলে করে মোট ৬ জন ও জীপ গাড়ি থেকে ২জন মোট ৮ জন আসামী লাঠি-সোটা নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে আমি ও আমার সহযোগীর উপর হামলা করে। আমরা কোন কিছুই বুঝে উঠার আগেই আসামীগণ কিল, ঘুষি, লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং ১ ও ২নং আসামী আমার PPO F5 মডেলের মোবাইল ও পকেটে থাকা ৫ হাজার টাকা এবং আমার সহযোগি মো. আরিফুল ইসলাম এর মোবাইল Redmi Note 8 ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমাদেরকে মারধর করে ফেলের রেখে যাওয়ার পর এসআই নাছির উদ্দিন, আজিজনগর পুলিশ ক্যাম্প (ইনচার্জ) উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য জরুরী বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিই। ঘটনার বিষয়ে আইনী প্রতিকার চেয়ে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে এজহার দায়ের করি।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম শেখ বলেন, আহত সাংবাদিকরা দুপুরে লিখিতভাবে এজাহার দায়ের করেন। এই ঘটনার প্রতিপক্ষরাও থানায় অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় লামা উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা গভীর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। লামা মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি। গণমাধ্যম কর্মীদের উপর বার বার নোংরা হামলার ঘটনা মুক্ত গণতন্ত্রের জন্য বাধা হিসাবে দেখছেন সংবাদকর্মীরা।