আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট):
কয়লা, গ্যাস, বা হাইড্রোজেন নয়; নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন চাই। এলএনজি টার্মিনাল ও জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করো। সূর্য যেহেতু জ্বালানি দেয়; তাই তেল আমদানির কোন প্রয়োজন নেই। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা অনুসারে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন করো। আমরা জলবায়ু উষ্ণতা থেকে বাঁচতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলির কাছে ঋণ নয়, আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রিয় যুগ্ম সম্পাদক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্বে জ্বালানি অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে মোংলার চিলা বাজার এলাকার সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীতে জলবায়ু অবরোধ ও অবস্থান কর্মসুচি পালনকালে সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন। জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও ব্রতীর আয়োজনে এ জলবায়ু অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসুচি পালিত হয়।
জলবায়ু অবরোধ ও অবস্থান কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র কমলা সরকার, বাপা নেতা গীতিকার মোল্লা আল মামুন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার শেখ রাসেল, মেহেদী হাসান বাবু, তন্বী মন্ডল প্রমূখ। জলবায়ু অবরোধ কর্মসুচিতে বক্তারা আরো বলেন জলবায়ু সংকটের জন্য আমরা দায়ী না। অতিরিক্ত মাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন আজ অনিবার্য হিসেবে দেখা দিয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি ক্লিন এনার্জি না। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি নীতি পরিহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু অবরোধ কর্মসুচিতে বক্তারা আরো বলেন দেশের সকল জনগনের জন্য সুলভ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতির অংশ ( ১৮ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদ )। প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্রীণহাইজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৭ ও ১৩ অর্জনের পূর্বশর্ত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশগত ন্যায় বিচার। বক্তারা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার এবং কার্বন নিরসনে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন করার আহ্বান জানান। জলবায়ু অবরোধ ও অবস্থান কর্মসুচিতে শতাধিক জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জলবায়ু অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসুচি ছাড়াও শুক্রবার বিকেলে মোংলার খাসেরডাঙ্গা গার্লস স্কুল মাঠে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার এবং ব্রতীর আয়োজনে জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্তত তিন সহস্রাধিক জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ লাঠিখেলা উপভোগ করেন।