রাজধানীতে মুখোমুখি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পর এবার ঢাকার প্রবেশমুখে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিচ্ছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। বিএনপি ও যুবলীগ শুক্রবার এ ঘোষণা দেয়। ফলে, গত কয়েকদিন ধরে দুইপক্ষের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাজধানীবাসীর যে উৎকন্ঠা তা শনিবারও থাকছে।
অবশ্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কাউকে রাস্তা আটকালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালন করে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি। আর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। দুপক্ষের সমাবেশই বড় কোনো গলযোগ ছাড়া শেষ হয়েছে।
তবে সমাবেশ থেকে ফেরার সময় রাজধানীর গুলিস্তানে ত্রিমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের পরিচয় মেলেনি। তবে আহতদের দুজন আওয়ামী লীগ ও দুজন বিএনপির সমর্থক।
নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ শেষে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শনিবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা ঢাকার প্রবেশপথ গুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদা পানিতে আটকা পড়েছে। বিএনপি রাস্তা বন্ধ করলে আমরাও তাদের চলার পথ বন্ধ করে দেব।’
এদিকে, বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার পরপর যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা জানান, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, গাবতলী, আমিনবাজার, বাবু বাজার, সাইনবোর্ড, কাঁচপুর, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর সব প্রবেশমুখে শান্তি সমাবেশ করবে সংগঠনটি।
এদিকে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কাউকে রাস্তা আটকালে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। শুক্রবার রাতে তিনি কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা কাউকে রাস্তা আটকাতে দেব না। যদি কেউ আটকায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
গত কয়েকদিন ধরেই, রাজপথে সরব বড় দুই রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। একআগেও এ মাসেই সমাবেশ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলো দুই পক্ষ। সেই সমাবেশও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়।
শুক্রবার দুই পক্ষ যে সমাবেশ করেছে তা নিয়েও হয়েছে নানা নাটকীয়তা। বিএনপি এই মহাসমাবেশ করতে চেয়েছিলো বৃহস্পতিবার। একই দিন পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছিলো যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। তবে বৃহস্পতিবার কর্মদিবস হওয়ায় জনভোগান্তি বিবেচনায় কোনো পক্ষকেই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বিএনপিকে গোলাপবাগ মাঠ আর আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সমাবেশ করতে অনুরোধ করা হয়। তবে তিন সংগঠনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার অনড় অবস্থান থেকে বিএনপি শেষ পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে শুক্রবারে নিয়ে আসে। বিএনপির এ ঘোষণার পর যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগও তাদের কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে দেয়।