যমুনায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২ দিনে সিরাজগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে একাধিক ঘর-বাড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিস্তৃর্ণ ফসলি জমি। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। ঘর-বাড়ি হারিয়ে অনেকে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। খোলা আকাশের নিচে অনেকের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে।
প্রতিদিনই নদীতে বিলীন হচ্ছে শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনেকে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ সেই সময়টুকু পাচ্ছেন না। তার আগেই নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে মাথা গোঁজার ঠাঁই।
বুধবার (১২ জুলাই) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাঙনের কবলে পড়ে গত এক সপ্তাহে কাজীপুরে মেঘাই ঘাট এলাকায় স্পার বাঁধের ৩০ মিটার বাঁধসহ এনায়েতপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুরে একাধিক বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরো বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প চালু থাকলেও তা কোন কাজে আসছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তারা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গাফলতি করছে। ভাঙন প্রতিরোধে চলমান প্রকল্পগুলোর কোনো গতি নেই।
প্রায় দেড় বছর আগে ৬৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়ে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর এনায়েতপুরের পাঁচিল থেকে ব্রাহ্মণগ্রাম পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সময় মত কাজ শেষ হলে এতবেশী ভাঙনের কবলে পড়ত না নদী পাড়ের মানুষ। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
তারা আরও বলেন, গত দেড় বছরের ভাঙনের কবলে পড়ে বসত বাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। গত দুই সপ্তাহে ভাঙনের কবলে পড়ে জামালপুর, ব্রাহ্মগ্রাম আড়কান্দিসহ দক্ষিণাঞ্চলে শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও চৌহালী ও বেলকুচি এলাকায় যমুনার উভয় তীরেই চলছে ভাঙন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রয়েছে। কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। এনায়েতপুর, জালালপুর, হাটপাঁচিল ও চৌহালীতে লাম্পিং কাজ চলছে। বর্ষাকালে পানির জন্য প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন কঠিন। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গত দুদিন পানি কমার পরে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ৯ সেন্টিমিটার ও কাজীপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/ এমএস