সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। তারই অংশ হিসাবে লামায় বিএটিবি’র ‘বনায়ন’ কার্যক্রমের উদ্যোগে সোমবার লামায় বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বনজ, ফলদ ও ঔষধি চারা বিতরণ করা হয়।
চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার। আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএটিবি’র চট্রগ্রাম সাউথ লিফ রিজিয়ন এরিয়া লিফ ম্যানেজার মোঃ আল-আমিন, লামা লিফ ডিপো ম্যানেজার তানজিম মাশরুর, লামা লিফ এরিয়া এসিস্ট্যান্ট লিফ অফিসার, মোঃ মুরাদুজ্জামান, লামা লিফ এরিয়া এসিস্ট্যান্ট লিফ অফিসার রাকিব হাসান সহ প্রমূখ।
এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো “প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে।” এবং স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে “ সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ।” এছাড়াও রোপণ করা বৃক্ষের যত্ন বৃদ্ধির জন্য এবারের জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন নীতির ওপর ভিত্তি করে ‘রূপকল্প ২০২১’ (২০১০-২০২১) এবং সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। প্রঙ্গত বলা যায়, সরকার জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনের জন্য সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পরিবেশ সংশ্লিষ্ট টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর/সংস্থা স্ব স্ব কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগোপযোগী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কার্যকরভাবে মোকাবেলায় বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং সেগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ সংরক্ষণকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদানপূর্বক বাংলাদেশের সংবিধানে পরিবেশ বিষয়ে একটি পৃথক অনুচ্ছেদ সংযোজন করে সুস্থ পরিবেশকে মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
এছাড়া, বিশ্ব উষ্ণায়নজনিত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ অভিঘাতের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন এবং প্রশমন বা কার্বন নিঃসরণ হ্রাস- এ দুই খাতেই বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সম্প্রতি সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন ২০১৭ জারি করেছে। সরকার দেশের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ কিছু এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ৩৮টি বনসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এলাকাকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা, পানি ও বায়ুদূষণ এবং জীববৈচিত্র্য ও মাটির ওপর বিরূপ প্রভাবে পরিবেশের গুণগতমানের অবনতির কারণে মারা যাচ্ছে হাজারো মানুষ। আমরা যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এর প্রতিকার না করি, তাহলে এর ফল হবে ভয়াবহ। ধ্বংস হবে প্রাকৃতিক সম্পদ, বাড়বে অভিবাসন এবং সেই সঙ্গে বাড়বে সংঘাত।
সর্বোপরি, শিল্পায়ন বিশ্বকে করেছে অনেক উন্নত ও আধুনিক। তাই শিল্পায়নের অগ্রগতি বজায় রেখেই বিশ্ববাসীকে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে উদ্বুদ্ধ এবং পরিবেশবাদী সংগঠন ও মিডিয়াগুলোকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস