খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার ২নং পাতাছড়া ইউপির অধিনস্থ পাগলাপাড়া নামক স্থানে, গত ৫ অক্টোবর ২০২৩ রাত আনুমানিক ৭টার দিকে সাধারণ বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কিতে আবুল কালাম আজাদ নামে এক মুদি দোকানদারকে মারধর, দোকান ভাংচুর ও দোকান থেকে নগদ টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। পাগলা পাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রহমত আলী (৩৫) পিতা হুদা মিয়া, নুর হোসেন,(২৫)পিতা বাচ্ছু মিয়া,মোঃ শাহিন (২০)পিতা আলী আশ্রাফ,মহিন উদ্দিন( ২২) পিতা বেলাল হোসেন,জহির (১৮)পিতা তাজু মিয়া, আব্দুর রহিম( ৩৫)পিতা আলী আশ্রাফ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।হামলায় গুরুতর আহত আবুল কালাম আজাদ পাতাছড়া এলাকার সাবেক মেম্বার,মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের ছেলে,বর্তমানে তিনি রামগড় উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
আহত মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, রহমত আলীর বাবা হুদা মিয়া বিকেল বেলায় আমার দোকান থেকে কিছু মালামাল ক্রয় করে বাসায় নিয়ে যান, ক্রয়কৃত মালামাল এর ভিতরে চানাচুর ও ললিপপের প্যাকেট ছিলো,সন্ধ্যা ৭/৮টার দিকে রহমত আলী আমার দোকানে এসে হুমকি স্বরুপ বলে আমার আব্বাকে কেন নষ্ট মেয়াদবিহীন চানাচুর ও ললিপপ দিয়েছেন, সে আমাকে অকাত্ব ভাষায় গালাগালি করেছে,আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম, যে যদি চানাচুর ও ললিপপ নষ্ট হয়ে থাকে তাহলে তা পরিবর্তন করে নিয়ে যাও, তাহলে তো ঝামেলা শেষ,এই কথা বলার সাথে সাথে রহমত আলী ও তার সহযোগীরা আমার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও আমাকে সবাই মিলে এলোপাতাড়ি মারধর ও মাথায় আঘাত করে, আমার দোকানের ক্যাশে থাকা চালানের নগদ ১লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন হুমকি দেন, আমার পরিবারের লোকজন আমাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নিতে চাইলে হামলাকারীরা রাস্তায় বাঁধা দেয়,এক পর্যায়ে আমি নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে রামগড় থানার এসআই মহসিন মোস্তফার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এবিষয়ে আমি রামগড় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
আবুল কালাম আজাদের -মা মোশরেফা কামাল বলেন, সাধারণ একটি বিষয় নিয়ে রহমত সহ তার সহযোগীরা আমার ছেলে ওপর হামলা চালিয়ে দোকানের মালামাল ভাংচুর করে,ঘটনার সময় এলাকার স্থানীয় মেম্বার মহিউদ্দিন ও উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি তিনি দেখেছেন এবং ওদের ভেজাল না করার জন্যে বাঁধা দিয়েছে,কিন্তু হামলাকারীরা মেম্বারের কথাও শুনেননি।
২ নং পাতাছড়া ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, জানান রহমত আলীর সাথে আবুল কালাম আজাদের দোকানের মালামাল বিক্রি নিয়ে তর্কাতর্কি হয়,এক পযায়ে দুইজনের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, এঘটনায় আজাদ ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে ,চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি দেখতে বলেন, আমি উভয়ের সমস্যার কথা শুনি এবং সমাধানের চেষ্টাও করেছি,তবে উভয়ে আমার কথা মানেনি,পরে আমি বিষয়টি আবার চেয়ারম্যান সাহেবকে জানিয়েছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত রহমত আলী জানিয়েছেন আজাদের দোকান থেকে আমার আব্বা আমার ছেলে মেয়েদের জন্যে চানাচুর, চিপস,বিস্কুট, ললিপপ কিনে নিয়ে যান,বাসায় নিয়ে খাওয়ার সময় দেখি ঐগুলো নষ্ট, নরম হয়ে গেছে এবং মেয়াদও নেই,আমি সন্ধ্যার সময় দোকানে গিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে যান, পরে তর্কাতর্কি হয়, এছাড়া বড় কোন সমস্যা হয়নি। রহমত আলী মারধর, দোকান ভাংচুর ও নগদ টাকার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
রামগড় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মহসিন মোস্তফা জানান ৯৯৯ থেকে একটি ফোন পেয়ে লোকেশন অনুযায়ী ঘটনাস্থলে গিয়ে মারামারি বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে, ঘটনাস্থল থেকে আবুল কালাম আজাদকে চিকিৎসার জন্যে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারপর ৬ অক্টোবর আবুল কালাম আজাদ রামগড় থানা একটি মামলা করেন,মামলা নং02/22 ধারা ৩২৩/৩২৫/৩০৭ /৪৮ /৪২৭/৩৮০/১০৯.৪/৫০৬ (2) প্যানাল কোর্ড রুজু করা হয়,তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আসামি ধরার জন্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এম/এস