কিছুদিন বিরতির পর আবারো মায়ানমার থেকে চোরাইপথে আসা গরু আটকে তৎপর হয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও আলীকদম ব্যাটালিয়ান (৫৭ বিজিবি)। গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার তিনদফা অভিযানে আলীকদম ৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে একটি ট্রাস্কফোর্স দল ১৯৪ টি গরু-মহিষ আটক করেছে। এসব গরু-মহিষের স্থানীয় বাজার মূল্য আনুমানিক ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসব গরু-মহিষ আটকে নেতৃত্ব দেন ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ শহিদুল ইসলাম ও আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহরুবা ইসলাম।
এসব গরু-মহিষের বড় দু’টি চালান গত সোমবার ও মঙ্গলবার আলীকদম বাজার থেকে ইজারাদারের রশিদ সংগ্রহ করে সড়কপথে ট্রাকযোগে নেওয়া হচ্ছিল।
গত রবিবার ৩৬টি মহিষ, সোমবার ১৯টি ট্রাকে ১১৭টি গরু এবং মঙ্গলবার সকালে ৩টি ট্রাকে ৪১টি আটক করা হয় বলে ৫৭ বিজিবি প্রদত্ত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
জানা গেছে, আলীকদম জোনের সহায়তা নিয়ে আলীকদম-ফাঁসিয়াখালী সড়কের কানামাঝি আর্মি ক্যাম্প চেক পোস্টে গরুর গাড়িগুলো আটকানো হয়। পরে ইউএনও এবং বিজিবি অধিনায়কের নেতৃত্বে গরু-মহিষ বোঝাই ২২ টি ট্রাক সোমবার বিকেলে এবং মঙ্গলবার সকালে আটক করা হয়।
এর আগে উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের দুমচি খাল এলাকা থেকে আরো ৩৬টি গরু জব্দ করেন ইউএনও এবং বিজিবির যৌথ টীম।
গত তিনদিনের অভিযানে সর্বমোট ১৯৪টি গরু-মহিষ আটক করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ শহিদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবারের অভিযানে পশু বহনকারী ট্রাকগুলো স্থানীয় ভাড়ায় চালিত যানবাহন হওয়ায় ট্রাস্কফোর্স কর্তৃক যানবাহনগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবারের অভিযানে আটক হওয়া ১১৭টি গরু পরীক্ষা করে ৪৬টি গরু অ-দেশীয় এবং স্থানীয়ভাবে প্রতিপালিত নয় মর্মে চিহ্নিত করা হয়। এসব গরু আটক করা হয়। অপরদিকে,৭১টি গরু দেশীয় গরুর দাবীর সমাধানের জন্য একদিন অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাস্কফোর্স। এরপর গরুগুলো আটক দেখানো হবে।
এদিকে, এই গরু-মহিষের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উপজেলা সদরে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী মিলে গড়ে তোলে একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। এই চাঁদার টাকার ভাগ পুলিশ থেকে শুরু করে নেতা-পাতি নেতা এবং কয়েকজন সংবাদকর্মী ভাগ-ভাটোয়ারা পেত বলে জানা গেছে।
বান্দরবানে জেলা পর্যায়ে নবনিযুক্ত প্রশাসনের একজন কর্তাব্যক্তিকে ‘হাদিয়া’ দিতে হবে বলে ব্যবসায়ীদেরকে জানিয়ে গরু-মহিষপ্রতি চাঁদার হার বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয় ব্যবসায়ী-চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের একটি বৈঠকে। স্থানীয় একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত বৈঠকের একটি অডিও ক্লিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এম/এস