গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীর্ঘ এই পথচলায় মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালের ০৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপমহাদেশের বৃহৎ এ ছাত্রসংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলন সহ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন ও এগারো দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী এ সংগঠনের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয় ও গৌরবোজ্জ্বল।
বৃহৎ এই ছাত্র সংগঠনটির বান্দরবান জেলার লামা উপজেলা শাখার সম্মেলন আগামী ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে অনুষ্ঠিত হবে লামা পৌর শাখা ও সরকারি মাতামুহুরী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন। এ উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মংক্যহ্লা মার্মাকে আহবায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীনকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহবায়ক মংক্যহ্লা মার্মা জানান, সম্মেলনে উপজেলা শাখায় সভাপতি পদে ৫ জন (মো. শামিম মিয়া, মো শহিদুল ইসলাম সাদ্দাম, মো. সাদ্দাম হোসেন রাকিব, বিপ্লব নাথ, এখ্যাইমং মার্মা) ও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন ৩ জন (রুবেল হাসান, সজীব মল্লিক ও মেহেদী হাসান রনি), পৌর শাখার সভাপতি পদে ২ জন (মো. রহিম উদ্দিন রাজু গাজী ও সুমন মাহম্মদ) ও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন ৩ জন (মহীন উদ্দিন শাওন, মো. ইকবাল হোসেন ইমন ও ফখরুল ইসলাম হেলাল) এবং সরকারি মাতামুহুরী কলেজ শাখায় সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সালাউদ্দিন ভূইয়া নাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন ২ জন (মো. খাইরুল ইসলাম বাপ্পি ও আরিফুল হকের) প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হয়। সম্মেলনে উপজেলা শাখায় ১৬১ জন, পৌর শাখায় ১৭১ জন ও কলেজ শাখায় ৭১ জন ভোটার রয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাউসার সোহাগ আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জনি সুশীল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক উসিং হাই রবিন বাহাদুর সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
জানা যায়, গত ২৪ জানুয়ারি সম্মেলনের দিন ধার্য্যের পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে প্রার্থীরা নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করেন উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি নমিনেশন ফরম বিক্রি করা হয়। ১০ জানুয়ারি ফরম জমা ও ১১ জানুয়ারি যাচাই বাছাই করা হয়। ১৩ জানুয়ারি প্রত্যাহার ও চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয় ১৪ জানুয়ারি। পরবর্তীতে অনিবার্য কারণবশত এ সম্মেলন স্থগিত করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী মো. শামিম মিয়া বলেন, ছাত্রদের অধিকার আদায়ে ছাত্রলীগ করি। আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রমে সবসময় একনিষ্ট হয়ে কাজ করেছি। আশা করি ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে সভাপতি নির্বাচিত করবেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির বান্দরবান উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ও আগামী সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলস কাজ করে যেতে চাই।
পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী মোঃ রহিম উদ্দিন রাজু গাজী বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই। আমি বিশ্বাস করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করবে। তবে ভোটাররা জানান, যাকে সুখে-দুঃখে পাবেন, তাকেই তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা বেশ জমে উঠেছে। দিন-রাত ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব মোঃ শাহীন বলেন, লামা উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখার সম্মেলন গত ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশক্রমে সম্মেলন স্থাগিত ঘোষণা করা হয়েছিল। পুনরায় জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশক্রমে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মীর সহযোগিতাও কামনা করেছে তিনি।
এম/এস