বান্দরবানের লামায় উন্নয়ন বোর্ডের একটি পাড়া কেন্দ্র (প্রাক প্রাথমিক স্কুল) পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের বই, আলমিরা, শিক্ষা সরঞ্জামসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে সরই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ধুমচা পাড়ায় (মসজিদ ভিটা) এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আজ রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) স্কুলের শিক্ষক পারভিন আক্তার লামা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্কুলের শিক্ষক পারভীন আক্তার জানিয়েছেন, শনিবার সকালে খবর পেয়ে তিনি স্কুলে গিয়ে দেখতে পান স্কুলটি পুড়ে গেছে। বর্তমানে স্কুলটির ৪৫ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বলতে পারছেন না।
পারভিন আক্তারের স্বামী সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আফসার জানিয়েছেন, স্কুলটি নিয়ে কারো সাথে কোন শত্রুতা নেই। কিন্তু কেন এটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কেউ বলতে পারছেন না।
তবে পুরো ইউনিয়নে সবচেয়ে ভালো স্কুল ছিল এটি। পুড়ে যাওয়া স্কুলটিতে তেলের গন্ধ বের হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল দিয়ে এটি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পাড়ার লোকজন জানিয়েছেন দুর্বৃত্তরা আলমিরা থেকে বই, শিক্ষা সরঞ্জাম বের করে ও দেওয়াল থেকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে সেগুলো পুড়িয়ে দেয়।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মবিনুল ইসলাম জানান, আমরা কোনভাবেই বুঝতে পারছি না কেন কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে আশপাশে কোন স্কুল না থাকায় স্কুলটি পুড়ে যাওয়ায় এলাকার শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের উপজেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক একেএম রেজাউল হক বলেন, সরই ইউনিয়নের সবচেয়ে ভালো স্কুলটি। স্কুলের সাথে কারো দ্বন্দ্ব থাকতে পারে না। পাড়াকর্মী খুবই দায়িত্ববান মানুষ৷ কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে আমার বোধগম্য নয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের জেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক আলু মং মারমা জানান, ২০১৮ সালে প্রকল্পের আওতায় স্কুলটি চালু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতামূলক অন্যান্য কাজও করা হতো পাড়া কেন্দ্রটিতে। এটি পুড়ে যাওয়ায় সেখানকার সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ক্যয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এম/এস