বোয়ালমারীতে আলোড়ন তুলেছে ‘ফাতেমা’ ধান। উচ্চ ফলনশীল জাতের এই ধানে শীষ প্রতি মিলছে আটশো থেকে হাজার করে ধান। যা প্রচলিত ধানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। তাই ফাতেমা ধান রীতিমতো সাড়া ফেলেছে উপজেলা জুড়ে। বোয়ালমারীর ময়না ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের কৃষক আকিদুল ইসলাম তার ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন এই ফাতেমা ধান। আকিদুলের দেখাদেখি অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন এই উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে। ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী গ্রামের বাবুল শেখ এ বছর ২৪ শতাংশ জমিতে ফাতেমা ধানের চাষ করছেন।
তথ্য মতে, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম তার ছেলের জমিতে চাষকৃত ধানের মধ্যে তিনটি ভিন্নধর্মী দেখতে পান। এই তিনটি ধানের শীষ থেকে পান দুই কেজি ধান বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত শেখ ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন। পরবর্তীতে কৃষক লেবুয়াতের মা এই ধানের উদ্ভাবক হওয়ায় তার নামানুসারে এই ধান ‘ফাতেমা ধান’ হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পরিচিতি পায়।
আকিদুল ইসলাম জানান, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঢাকার মগবাজার থেকে এই ধান সংগ্রহ করি। এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি।
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, এই ধানের বিশেষ বৈশিষ্ট হলো এর লম্বা শীষ। ধানগাছের পাতা চওড়া দেড় ইঞ্চি। এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং অনেক বেশি শক্ত। তাই এই ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোন আশঙ্কা নেই। ফলে অন্য যেকোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।
ফাতেমা ধান চাষি বাবুল শেখ বলেন, এটি অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় উচ্চ ফলনশীল। তাই এর প্রতি মানুষের আগ্রহ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে দুই-একজন ফাতেমা ধান চাষ করছেন। এ ধান সম্পর্কে আমাদের কাছে বিস্তারিত কোন তথ্য নেই।