• রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
খেলাধুলা একটি জাতির উন্নতির অন্যতম মাধ্যম- বলেন -লে. কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান আওয়ামী সরকারের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে মশাল মিছিল রাইখালী ত্রিপুরা সুন্দরী কালী মন্দিরের উন্নয়নের জন্য ৮০ হাজার টাকা অনুদান  দিলেন  সবুজ মারমা দীঘিনালা জোনের উদ্যোগে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বান্দরবানে বিএনপির বিক্ষোভ রুমায় গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালকসহ নিহত,২ আহত- ৪ বান্দরবানে ৭ শ্রমিককে অপহরণ করল সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নির্বাচন কমিশনের পরিপত্রের জটিলতায় গুইমারাতে নতুন ভোটার হতে পারছেনা বাঙালীরা গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ দীঘিনালায় স্কাউটস এর ত্রি- বাষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত রামগড়ে গভীর রাতে পাহাড় কাটার দায়ে ২ ব্যক্তির তিন লাখ টাকা জরিমানা  মহালছড়ি থানা পুলিশের বিশেষ অভিযান, আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার

কে এই অসহায় বৃদ্ধ : কাপ্তাই উপজেলা সদর হাসপাতাল চত্বরে নিদারুণ কষ্টে মানবতার জীবন যাপন করছেন

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি: / ৮৪ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

কাপ্তাই উপজেলা ইউএনও অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো: হেলাল উদ্দিন এবং তাঁর সহধর্মিণীর মোছাম্মদ হামিদা বেগমের মানবিকতা

 

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি) প্রতিনিধি: বুধবার (৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টা। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা সদর হাসপাতাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায় হুইল চেয়ারে বসা ষাটোর্ধ এক নাম নামপরিচয় বিহীন বৃদ্ধ। এই প্রতিবেদক তাঁর সাথে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। নানা অসুখে নিদারুণ মানবতার জীবন যাপন করছেন। শরীরে বিভিন্ন স্থানে উপশমের চিহ্ন। নেই কোন পরিবারের সদস্য নেই কোন আত্মীয় স্বজন। শুধুমাত্র স্থানীয় জনগণ, গাউসিয়া কমিটি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সমাজসেবা অফিসের সহায়তায় কোন রকমে বেঁচে আছেন বৃদ্ধ এই লোকটি।

এসময় দেখা যায় কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো: হেলাল উদ্দিন এবং তাঁর সহধর্মিণী মোছাম্মদ হামিদা বেগম অসহায় বৃদ্ধ এই লোকটির সেবা করছেন এবং খাবার দিচ্ছেন।

কথা হয় মো: হেলাল উদ্দিন এর সাথে।
তিনি বলেন, গত ৬ দিন আগে কে বা কাহারা লোকটিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রেখে চলে যান। একদিন পর সন্ধ্যার দিকে খবর পেয়ে আমি ছুটে আসি। দেখি লোকটা হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে প্রশ্রাব পায়খানা করে ভরে ফেলেছেন। দূর্গন্ধে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের সব রোগীরা চলে যান। এরপর আমি এবং আমার সহধর্মিণী সহ লোকটিকে হাসপাতাল হতে নীচে নামিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে গোসল করালাম। তারপর হাসপাতাল চত্বরে গার্ড রুম পরিস্কার করে মশারি টাঙিয়ে রাতে থাকার ব্যবস্থা করি। গত ৬ দিন ধরে আমরা তাঁর সেবা করছি, নিয়মিত খাবার দিচ্ছি, পায়খানা প্রশ্রাব পরিস্কার করছি। এই পর্যন্ত তাঁর কোন ওয়ারিশ পাই নাই।

মো: হেলান উদ্দিন এর সহধর্মিণী মোছাম্মদ হামিদা বেগম বলেন, গত এক সপ্তাহে ধরে আমি এবং আমার সহধর্মিণী লোকটির সেবা শুশ্রূষা করে আসছি। লোকটার কেউ নেই।

কর্ণফুলী সরকারি কলেজের প্রভাষক মো আরাফাত হোসেন এর সাথে এইসময় দেখা হয় হাসপাতালে চত্বরে। তিনি বলেন, উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিটির সংবাদ শীলছড়ির বাসিন্দা সুমন রায়হানের মাধ্যমে যখন আমার কাছে আসে, তখন আমি এলাকার ছাত্র ও যুবকদের সহায়তায় এবং কাপ্তাই ইউএনও অফিসের কর্মচারী হেলাল উদ্দিনকে সাথে নিয়ে লোকটিকে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে যায় । তখন লোকটির অবস্থা খুবই মুমূর্ষু ও দূর্গন্ধ যুক্ত ছিল। যার ফলে হাসপাতালের সাধারণ রোগীরা বেডে অবস্থান করতে না পেরে বারান্দায় বিভিন্ন ফ্লোরে অবস্থান করে। এ বিষয় আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরে, সবার সহায়তায় লোকটিকে পরেরদিন হাসপাতাল থেকে নিচে নামিয়ে পরিষ্কার করি এবং হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রহরীর কক্ষে তাকে রাখার ব্যবস্থা করি। ওনার পাশে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ান গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, সাধারণ শিক্ষার্থী, এলাকার যুবসমাজ, এলাকার সাধারণ মানুষ, সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সকলের সহায়তায় আমরা একটি ছোট ফান্ড কালেক্ট করে ব্যয় নির্বাহ করছিলাম। কিন্তু অজ্ঞাত ব্যক্তিটির দৈনন্দিন খরচ এবং চিকিৎসা সামগ্রী অনেক ব্যয় বহুল বিধায় আর্থিক সহযোগিতা এবং পরিবারকে সদস্যের খুঁজে দিতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি । যোগাযোগ এবং সহায়তা পাঠানোর নম্বরঃ এম.কে.এ.সুমন ০১৮৮৩৩৪৫২৯২(বিকাশ/নগদ)

কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ওমর ফারুক রনি বলেন, গত সপ্তাহে কে বা কারা বৃদ্ধ লোকটিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে রেখে করিয়ে চলে যান। আমরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করি। একবার জিজ্ঞেস করেছি আপনার নাম কি। তখন তিনি বললেন আমার বাড়ি নোয়া পাড়ায়। আমার নাম মহরম আলী। এরপরে উনি আর কথা বলতে পারছে না। পরে উনাকে হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করে দিই। কিন্তু লোকটার অবস্থা এতই খারাপ যে, হাসপাতালের বেডে তিনি পায়খানা প্রশ্রাব করছেন। পরবর্তীতে উনাকে আমরা হাসপাতাল চত্বরে গার্ড রুমে থাকার ব্যবস্থা করি। তবে উনার কোন ওয়ারিশ এসে উনাকে নিয়ে গেলে ভালো হতো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ